ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ১১ জুন ২০২৩ : রাজধানীর বনানীতে সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা শেরাটন হোটেলের অনিয়ম নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দাউএর করেছেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রোববার (১১ জুন) সকালে এ রিট দায়ের করেন তিনি। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এটির শুনানি হবে।
Advertisement
এ আগে গর ৪ জুন সরকারি জমিতে ৫ তারকা শেরাটন হোটেলের অনিয়ম নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগপত্র জমা দেন ব্যারিস্টার সুমন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, রাজধানীর বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে ২০০৬ সালে একটি চুক্তি হয় বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডের। বোরাকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নূর আলির সঙ্গে চুক্তিতে বলা হয়, বনানী কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে ও বনানী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সিটি করপোরেশনের জমিতে ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হবে। ভবনের ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, ৭০ শতাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমার প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে যে বনানীর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন অসম চুক্তি কিভাবে হয়? এই চুক্তিতেই দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যায়। আর এটি নিশ্চিত হয়েছে যেভাবে তা হল, যে ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন সে ভাগের সম্পদের মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কিন্তু সে হিস্যা গত এক দশকেও বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। উল্টা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪ তলার স্থলে ২৮ তলা ভবন নির্মাণ করে পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বোরাক।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ২০০৬ সালে চুক্তি হয়, ২০১০ সালে সেটি হস্তান্তর করার কথা ছিল, সেখানে এখন ২০২৩সাল চলে। প্রায় ১৪ বছর ধরে বোরাক রিয়েল এস্টেট শেরাটন হোটেলের মত একটি আন্তর্জাতিক হোটেল তারা নিয়ে আসছে, কিন্তু একটি টাকাও এখন পর্যন্ত সিটি করপোরেশন পায়নি।
সে সময় মেয়র ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কিভাবে এমন অসম চুক্তি করতে পারেন- প্রশ্ন তুলেন ব্যারিস্টার সুমন। বলেন, যে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন সে কিভাবে একটি বেসরকারি রিয়েল এস্টেটের মালিককে রাষ্ট্রের সম্পত্তির ৭০ ভাগ মালিকানা দিয়ে দেয়। এটা আমার বোধগম্য হয় না।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার মনে হয় নুরে আলমের মুখোমুখি হবার মত শক্তি আমাদের সিটি করপোরেশনের নেই।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, নতুন বাজেটে যাদের শুধু টিন আছে তাদেরকেও ২হাজার টাকা কর ধার্য করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমি কিছু বলবো না। আমদের কষ্ট করে হলেও এই টাকা আমরা হয়তো দিব, কিন্তু সেখানে ১৪ বছর ধরে কোটি কোটি টাকা পরে আছে আপনারা সেখানে কিছুই বলবেন না? এ কারণে আমার মনে হয়েছে একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমার এ অভিযোগটি করা উচিত।
Advertisement
গত ১ জুন দেশের একটি গণমাধ্যমে ‘বনানীতে ২৮ তলা ভবন সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে উঠে আসে কিভাবে ১৪ তলার চুক্তি করে ২৮ তলা ভবন বানিয়ে ভোগদখল করছে বোরাক রিয়েল এস্টেট। অথচ জমির মালিক সিটি করপোরেশন।