ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩ : বিউটি হত্যার পাঁচ বছর পর হত্যাকাণ্ডের জট খুলছে। পিবিআই এ ঘটনায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বেরিয়ে এসেছে রহস্য।
সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের পিবিআই পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে।
Advertisement
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণ-গ্রামের স্বপন ব্যাপারী (৩৭), মো. মমিন (৫৫), মমিনের স্ত্রী অণু বেগম (৪০) এবং ওমর ফারুক (২৮)। ফারুককে ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরইমধ্যে তিনি জামিন পেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রামের পশ্চিম পাড়ায় সাচ্চু মিয়ার মেয়ে বিউটি খাতুন। ২০১৮ সালের ১৩মে রাতে নিজ ঘরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারীকে।
হত্যার পরদিন বিউটির বাবা বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশের দুই বছরের তদন্ত কোন তথ্য প্রমাণ না মেলায় বাদীর আবেদনে ২০২০ সালে মামলার তদন্ত পায় পিবিআই। তদন্তের একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ওমর ফারুককে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার কাছ থেকে তেমন কোনা স্বীকারোক্তি না পাওয়ায় ভিন্ন পথ বেছে নেয় পিবিআই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় মাদকের ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বহু মানুষের আনাগোনা ছিলো। এখানেই একসময়ে স্বামী পরিত্যক্তা বিউটির সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্থানীয় প্রভাবশালী স্বপন বেপারীর। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় বিয়ের জন্য চাপ দেন বিউটি।
স্বপন বেপারী নিজের মান আর প্রভাব বাঁচাতে বিউটিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। স্বপনকে চারদিন আগে আটক করা হলে তিনি তার অপরাধ স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
Advertisement
তার বর্ণনায় উঠে আসে, হত্যাকাণ্ড ঘটাতে অভিযুক্তের সাথে যুক্ত ছিলেন বিউটির খালা-খালুসহ চারজন। মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিউটির খালু মোমিন ও খালা আনু খাতুন হত্যার জন্য সকল বন্দোবস্ত করেন।
পিবিআই বলছে, হত্যার সাথে বিউটির খালু মেমিন, খালা আনু খাতুন, ওমর ফারুক ও প্রেমিক স্বপন বেপারী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। গত ২৩ ও ২৫ মে রাতে পিবিআই সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে। পরে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জানা যায় সেদিন বিউটিকে তারা হাত-পা ধরে বুকের ওপর বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। সকলের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে কাঁচা মাটির ঘরের নিচে গর্ত করে রাখেন তারা, যাতে এটাকে সবাই চোর ও বহিরাগত কেউ হত্যা করেছে বলে মনে করে।
Advertisement
নিহতের বাবা-মা এ ঘটনার সঠিক আর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জ পিবিআইয়ের এসআই ফয়সাল আহমেদ জানান, দীর্ঘ সময় নানান বেশে রহস্য উদঘাটন করতে লেগেছিলেন তিনি।