https://www.youtube.com/live/6J9KCEUtTIs?feature
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ২৭ মে ২০২৩ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার আবারও গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দায়ের শুরু করেছে। এবার কিন্তু সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। আগামী নির্বাচনে তাদের কোনো খবর থাকবে না। সেজন্য নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির করছে সরকার।’
শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অবিলম্বে বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি ও দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি বন্ধ ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর মুক্তি দাবিতে জনসমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
Advertisement
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গায়ের জোরের অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আবারও টিকে থাকার জন্য আমাদের নেতা রফিকুল আলম মজনু, সাইফুল আলম নীরব, মোনায়েম মুন্নাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা ফের ক্ষমতায় থাকতে গায়েবি মামলা শুরু করেছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কারণ তাদের উদ্দেশ্য একটাই- আবারও গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকা। এরই মধ্যে দেশের মানুষ এই সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামীতে ইস্পাত কঠিন আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এর বিকল্প নেই।’
ড. খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘অতীতে আমাদের বিভাগীয় সমাবেশে সরকারি দল ও তাদের পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর নির্যাতনের উপেক্ষা করে মানুষ সমাবেশ সফল করেছে। তবুও তারা সমাবেশে যোগদান করেছে। আজকে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশ বিদেশে ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। কারণ শেখ হাসিনার অধীনে আগে যেসব নির্বাচন হয়েছে সেগুলো সুষ্ঠু হয়নি। ২০১৮ সালে আগের রাতেই ভোট ডাকাতি করেছে আওয়ামী লীগ। কারণ তারা জানে খালেদা জিয়ার দল বিএনপিকে ঠেকানো যাবে না।’
Advertisement
ড. মোশাররফ বলেন, ‘এবারও সরকার ইভিএম দিয়ে ভোট করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের দাবির মুখে ইভিএম প্রকল্প বাতিল হয়েছে। এবার কিন্তু সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। আগামী নির্বাচনে তাদের কোনো খবর থাকবে না। সেজন্য নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির করছে সরকার। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। দেশের অর্থনীতি ও সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি সরকার ঠেকাতে পারেনি। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সেজন্য জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই। মানুষ একবেলা ঠিকমতো খেতে পারে না। আজকে মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করছে।’
Advertisement
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান যাতে দেশে এসে নেতৃত্ব দিতে না পারে সেজন্য তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করেছে।’
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। অতীতে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, আগামীতেও হবে না। সেজন্য বিএনপি তাঁর অধীনে নির্বাচন যাবে না। আজ আন্তর্জাতিকভাবেও দাবি উঠেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। বিএনপিসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে আন্দোলনরত কোনো দল হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না।’
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এর আগে আমেরিকা র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে আবারও ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিয়েছে। এই ঘোষণা বাংলাদেশের মানুষের জন্য লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। তাছাড়া সংকটের সমাধান হবে না।’
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব- অবৈধ, অনৈতিক হুকুম মানবেন না। অতীতে যারা এমনটা করেছে তাদেরকে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কোনো অন্যায় কাজ করবেন না। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। আপানারা অতি উৎসাহী হবেন না। জনগণের পক্ষে অবস্থান নিন।’
পূর্বঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. আমিনুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা মো. আমানউল্লাহ আমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, রকিবুল ইসলাম বকুল, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা মহানগরীর ইউনুস মৃধা, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল করিম শাহিন, নিলোফার চৌধুরী মনি, আরিফা সুলতানা রুমাসহ কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।