ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),টাঙ্গাইল প্রতিনিধি,শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩ : টাঙ্গাইলে জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। আরিফ-সুমাইয়া দম্পতির কোল আলোকিত করে জন্ম নেওয়া দুই শিশুর চিকিৎসা নিয়ে বড়ই চিন্তিত তারা। শিশু দুটির নাম রাখা হয়েছে হাসান ও হোসাইন। নিজেদের সামর্থ্য না থাকায় সকলের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে শিশু দুটিকে বাঁচাতে চান অসহায় মা বাবা।
Advertisement
গত শনিবার (৬ মে) রাতে টাঙ্গাইল শহরের রাজধানী নার্সিং হোমে সিজারিয়ান ডেলিভারির মাধ্যমে জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম দেন সুমাইয়া আক্তার। সুমাইয়া টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের আগ দিঘুলিয়া গ্রামের আরিফুল ইসলামের স্ত্রী। জন্ম হওয়ার তিন দিন পর গত ৯ মে মা-সহ সন্তান দুটিকে বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। জোড়া লাগানো যজম শিশু জন্ম হওয়ার খবরে শিশুদের দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে অসংখ্য মানুষ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের আলাদা করা সম্ভব। এজন্য অপারেশনের ব্যয় অনেক। পূর্বেও এই ধরনের অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে।
প্রতিবেশী নুরজাহান বেগম বলেন, জীবনেও জোড়া লাগানো শিশু দেখিনি। কেমন হয়েছে সেইটা দেখতে এসেছি। দুই শিশুর বুক একটিই।
Advertisement
আরাফাত বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইউটিউবে দেখেছি জোড়া লাগানো যমজ শিশু। এখন বাস্তবে দেখলাম। এমন ঘটনা এই প্রথম। তাই অনেকে উৎসুক হয়ে শিশু দুটিকে দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছে।
যমজ সন্তানের বাবা আরিফুল ইসলাম জানান, স্ত্রী যমজ দুই শিশু জন্ম দিয়েছে। কিন্তু তাদের বুক একে অপরের সাথে জোড়া লাগানো। ডেলিভারির আগেও আল্ট্রাসনোগ্রাফে বাচ্চা যমজ হবে জানতে পারলেও জোড়া লাগানোর বিষয়টি জানা যায়নি। জন্মের পর দেখা যায় তাদের শরীর জোড়া লাগানো। ক্লিনিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ না থাকায় টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ৯ তারিখ বাসায় নিয়ে আসা হয়। স্ত্রীসহ সন্তান দুটি এখন সুস্থ রয়েছে। বিকল্প পদ্ধতিতে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালানোই কষ্টকর। চিকিৎসা করানো সামর্থ্য তাদের নেই। শিশু দুটিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বিত্তবানসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে সহযোগিতার অনুরোধ করেন তিনি।
Advertisement
জোড়া লাগানো দুই সন্তানের মা সুমাইয়া আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, শরীর জোড়া লাগানো থাকলেও খাবার ও প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা আলাদা। সন্তান দুজনকে আলাদা শরীরে দেখার খুবই ইচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয় বহন করা আমাদের মতো দরিদ্র পরিবারের নেই। স্বামী যে উপার্জন করে তাতে সংসার ঠিক মতো চলে না। আমরা খুবই বিপদে আছি। সবার সাহায্য চাই, যাতে আমার সন্তান দুটেকে বাাঁচাতে পারি। তাদের সাহায্য করতে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন তিনি- ০১৩১৪-৬৯৮৯০৩।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. লিংকু রাণী কর কালের কণ্ঠকে বলেন, চিকিৎসা শাস্ত্রে এটিকে কনজয়েন্ড টুইন বেবি বা সংযুক্ত যমজ শিশু বলা হয়। এটি অবশ্যই জটিল একটি চিকিৎসা। অস্ত্রোপচার করা গেলে সফলতা সম্ভব। পূর্বে দেশে জোড়া লাগানো বেশ কয়েকটি শিশুর অস্ত্রোপচার করে আলাদা করা হয়েছে।
Advertisement
নাগরপুরের ভাড়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক কালের কণ্ঠকে বলেন, এ পরিবারটি হতদরিদ্র। চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য তাদের নেই। আমরা তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা বিষয়টির খোঁজ নেবো। সেইসাথে তাদেরকে সরকারিভাবে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।