ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),খুলনা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ০৪ মে ২০২৩ : পাঁচটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভায় পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে খুলনা জেলা বিএনপির দুই গ্রুপ মুখোমুখি। গত ২৪ এপ্রিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ওই কমিটি ঘোষণার পর জেলা, উপজেলা ও পৌর বিএনপিতে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ-অসন্তোষ।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ৩৭ জন নেতাকে নিয়ে পাল্টা সভা করে ওই সাতটি ইউনিটের ‘পকেট কমিটি’ স্থগিত ঘোষণা করেন। অপর পক্ষ বলছে যুগ্ম আহ্বায়কের এই এখতিয়ার নেই।
Advertisement
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী যৌথ স্বাক্ষরে ডুমুরিয়া, ফুলতলা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও কয়রা উপজেলা এবং পাইকগাছা ও চালনা পৌরসভায় পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এই কমিটি ঘোষণার পর জেলা বিএনপিতে শুরু হয় গৃহদাহ। ২৬ এপ্রিল পাইকগাছা ও চালনা পৌরসভা, ২৭ এপ্রিল ডুমুরিয়া, ২৯ এপ্রিল বটিয়াঘাটা ও কয়রা উপজেলা বিএনপির একাংশ খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষিত ‘পকেট কমিটি’ প্রত্যাখ্যান করে।
গত ২৯ এপ্রিল কয়রা উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি উপজেলা বিএনপির ৮ জনের পদ-পদবী সাময়িক স্থগিত করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এর আগেও সংবাদ সম্মেলন করার পর ওই ৪টি ইউনিটের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয় জেলা ও উপজেলা বিএনপি।
Advertisement
কমিটি গঠন নিয়ে নেতাকর্মীরা এখন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আবু হোসেন বাবুর নেতৃত্বে আরেকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বাবুকে কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও খুলনার রূপসা উপজেলার বাসিন্দা আজিজুল বারী হেলাল সমর্থন দিচ্ছেন বলে এজাজ-বাপ্পী গ্রুপের অভিযোগ। তবে আজিজুল বারী হেলাল নাশকতা মামলায় কারাগারে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু ২ মে জেলা বিএনপির সভা করে ৫ উপজেলা ও ২ পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত ঘোষণা করে। ওই সভায় সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন না। আর জেলা আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান নাশকতা মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু বলেন, তার আহ্বান করা সভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৬৫ জন সদস্যের মধ্যে ৩৭ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবার মতামতের ভিত্তিতে সাতটি ইউনিটের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে খুলনা বিভাগের বাসিন্দা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সদস্য সচিবকে বাদ রেখে সভা করা যায় কিনা-এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সে কারণে জরুরি ভিত্তিতে এই সভা করা হয়েছে।
Advertisement
আবু হোসেন বাবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কোনো সভা কিংবা আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের সঙ্গে ন্যূনতম কোনো আলোচনা ছাড়াই সাতটি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে যারা মামলার আসামি হয়েছে তাদের অনেককেই বাদ দেয় তারা। ফলে বঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিদ্রোহ করবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী বলেন, যাচাই-বাছাই করে ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের অবদান রয়েছে তাদেরকে দিয়েই কমিটি করা হয়েছে। সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনা করেই কমিটি করা হয়। বিগত সময়ে যারা দল পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে তাদেরকে নেতৃত্বে আনা হয়নি।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের সঙ্গে কথা না বলে এ ধরণের সভা করতে পারে না। এছাড়া কমিটি স্থগিত করার এখতিয়ার তার নেই।