ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সামনে মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার হুমকি সংবলিত একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবতাহী রহমান (২৫) নামে এক শিক্ষার্থী এ চিরকুটটি পান।
Advertisement
চিরকুটে বলা হয়েছে, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা কাজটা শিরকের। এখানে এসে ক্ষতি করো না তোমাদের। হামলা হতে পারে এনি টাইম। ঐ দিনের দাজ্জালি বাহিনী পাবে না টের মোদের।’
এ ঘটনায় বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে ওই শিক্ষার্থী শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার হুমকি সংবলিত একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
Advertisement
এর আগে রোববার (৯ এপ্রিল) মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। সংস্কৃতি, ধর্ম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তিন সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
এতে বলা হয়েছে, পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হাজার বছর ধরে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী বাঙালি জনগণ একে অপরের ধর্মকে সম্মান করে এই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করে আসছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে একটি কৃত্রিম কার্যকলাপ বাঙালি সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। মূলত এই কৃত্রিম উদ্ভাবিত মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে পহেলা বৈশাখের কোনো সম্পর্ক নেই।
Advertisement
নোটিশে বলা হয়, ‘মঙ্গল’ শব্দটি একটি ধর্মসংশ্লিষ্ট শব্দ। সব ধর্মের লোকজন তাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে ‘মঙ্গল’ প্রার্থনা করে থাকেন। এখন এই মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের দৈত্যাকৃতির পাখি, মাছ ও বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য প্রদর্শনের মাধ্যমে মুসলিম জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২-ক-এর সরাসরি লঙ্ঘন। এটা দণ্ডবিধির (Penal Code) ২৯৫-ক ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধও।
তাই নোটিশ পাওয়ার পর ‘অসাংবিধানিক, বেআইনি ও কৃত্রিম উদ্ভাবিত’ মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সেবারই এ উৎসব সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়। এরপর থেকে বাংলা বর্ষবরণের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে এটি।
Advertisement
১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এ আনন্দ শোভাযাত্রা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নাম ধারণ করে। পরে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে এ শোভাযাত্রা।