ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আইন আদালত প্রতিনিধি,সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩ : রাজধানীর রমনা থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান। ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় ও পুলিশ প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কর্মকার জানিয়েছেন, সোমবার (৩ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সিএমএম আদালতে শামসুজ্জামানকে আনার পর রমনা থানা পুলিশ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। এরপর শামসুজ্জামানের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তার আইনজীবী। ওই দিন উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার জামিন শুনানিতে বলেন, সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় ফুল বিক্রেতা এমন ১২ থেকে ১৩ জনের বক্তব্য আর এক দিনমজুরের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ মামলার অভিযোগ কোনোভাবেই সত্য না। হয়রানির উদ্দেশ্যেই মামলাটি করা হয়েছে। মামলা না করে প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দেওয়া যেতে পারতো।
Advertisement
জামিনের বিরোধিতা করে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু শুনানিতে বলেন, যারা স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের উদ্দেশ্যে এসব (খবর প্রকাশ) কাজ করছে। এ মামলার বিষয়বস্তু অনুযায়ী আসামি অপরাধ করেছে।
শুনানিতে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী নজিবউল্লাহ হিরু বলেন, দেশের যখন স্বাধীনতা ছিল না তখন স্বাধীনতার জন্য কথা বলা হয়েছে। এখন কি দেশে ভাতের স্বাধীনতা নেই? উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। যার বক্তব্য প্রকাশ করা হলো সেই জাকির কোথায়? সরকারের ভালোটা তাদের (প্রথম আলো) চোখে পড়ে না।
Advertisement
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে একজন শ্রমজীবীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব’। এ মন্তব্য ধরেই খবরটির শিরোনাম করা হয়। তবে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডে ছবি দেয়া হয় আরেকটি শিশুর। এ ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রতিবেদনটিতে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ উপাদান থাকার কথাও বলা হচ্ছে।
পরদিন বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাত্তর টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। তাতে দাবি করা হয়, একটি শিশুকে ১০ টাকা দিয়ে সেই কথা বলানো হয়েছে।
Advertisement
পরে অবশ্য দৈনিক প্রথম আলো প্রতিবেদন থেকে ছবি সরিয়ে শিরোনাম বদলে দেয়। পাশাপাশি সামাজিকমাধ্যমে দেয়া তাদের পোস্টও প্রত্যাহার করে নেয়। প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ তথ্য প্রচারের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের নেতা গোলাম কিবরিয়া। সেই মামলায় কেবল শামসকেই আসামি করা হয়।
পরে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, জাতির জন্য মানহানিকর’ তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ ও প্রচারের অভিযোগে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আইনজীবী মশিউর মালেক।