ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নওগাঁ প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ : নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে র্যাব সদর দপ্তর। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে তদন্ত করছি। তদন্তে কোনো র্যাব সদস্যের অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাব কমান্ডার দাবি করেন, ওই নারী ফেসবুক আইডি হ্যাক করে প্রতারণা করতেন। যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে প্রতারণার অভিযোগেই তাকে আটক করা হয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেন তিনি। তার কাছ থেকে আলামত হিসেবে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, সুলতানা জেসমিনকে নিয়ে আমরা একটি কম্পিউটারের দোকানে নিয়ে গেলে আলামতগুলো প্রিন্ট করা হয়। পরে সেখান থেকে থানায় নেবার সময় অসুস্থ বোধ করলে জেসমিনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে পরিবারের সহযোগীতায় দুদিন চিকিৎসা চলে তার।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে র্যাবের হেফাজতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে ময়নাতদন্ত প্রতিবদেন জমা দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এতে অস্বাভাবিক উচ্চ রক্তচাপকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের উপর আজ শুনানি হবার কথা রয়েছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ নওগাঁয় র্যাবের হাতে আটকের পর সুলতানা জেসমিন নামে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২২ মার্চ আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এরপর শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরের দিকে সুলতানার মরদেহ বুঝে পায় তার পরিবার।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।
Advertisement
ঘটনার বিষয়ে জেসমিনের ভাই সোহাগ ও তার বোন জামাই রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে অফিস করার জন্য বাসা থেকে বের হন জেসমিন। দুপুরের দিকে লোক মারফত তারা জানতে পারেন র্যাবের লোকজন জেসমিনকে আটক করেছে। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে তাকে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু মরদেহ বুঝে পাওয়া যায় আরও একদিন পর ২৫ মার্চ দুপুরে।
নিহত সুলতানার মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক বলেন, নওগাঁ শহরের জনকল্যাণ এলাকায় একটা ভাড়া বাসায় থাকতেন জেসমিন। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় প্রায় ১৭ বছর আগে। তার এক সন্তান। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে সন্তানকে লালন-পালন করে আসছিল জেসমিন। এর আগে কোনো দিন তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায়নি বলেও জানান তিনি।
Advertisement
আটকের বিষয়ে রাজশাহী র্যাব-৫ কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার সিপিএসসি মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করা হয়েছিল সুলতানাকে। আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে রাজশাহী নেয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং গত শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২৫ মার্চ দুপুরে স্বজনদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।