ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩ : অবশেষে বাতিল হলো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ওয়াসার গ্রাহকদের কাছ থেকে পানির বিল বিতরণের কাজ। এতে ঢাকা ওয়াসার মাসে সাশ্রয় হবে ৪০ লাখ, আর বছরে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।
Advertisement
রোববার (১৯ মার্চ) একাত্তরকে এ তথ্য জানান ঢাকা ওয়াসার প্রধান বিপণন কর্মকর্তা প্রকৌশলী উত্তর কুমার রায়।
এর আগে চলতি বছরের তিন ফেব্রুয়ারি ওয়াসায় অবৈধভাবে তিনটি কুরিয়ার সার্ভিসকে কাজ দেয়াসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে ‘ঢাকা ওয়াসায় আজগুবি কাণ্ড’ শিরোনামে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রচার করেছিল একাত্তর টেলিভিশন।
Advertisement
একাত্তরের অনুসন্ধান বলছে, শত শত বিলিং সহকারীকে বেতন দেয়ার পরও বিল বিতরণের কাজ ২০২১ সাল থেকে কন্টিনেন্টাল, মধুবন ও এক্সপ্রেস টু বিজনেস নামে তিনটি কুরিয়ার সার্ভিসকে দায়িত্ব দেয় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
বিলপ্রতি ৮ ও ৯ টাকা করে ওয়াসার ১০টি জোনের মোট তিন লাখ ৮৪ হাজার গ্রাহকের বিল বিতরণের দায়িত্ব অবৈধভাবে দিয়েছিল ওয়াসা।
Advertisement
এতে বিল বিতরণের কাজে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর পেছনে মাসে ৪০ লাখ টাকা, আর বছরে সাড়ে চার কোটি টাকা বাড়তি খরচ হতো।
একাত্তর টেলিভিশনের সংবাদ প্রচারের পর বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে চলতি মাস থেকেই কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিল বিতরণের কাজ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিলপ্রতি আট টাকার বিনিময়ে ৩,৫ ও ১০ নম্বর জোনের বিল বিতরণের দায়িত্বে মধুবন কুরিয়ার এবং ৮ ও ৯ নং জোনের বিল বিতরণের কাজ পেয়েছিল এক্সপ্রেস টু। আর বিলপ্রতি ৯ টাকা দরে ১, ২, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর জোনের বিল বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসকে।
Advertisement
একাত্তরের অনুসন্ধানে জানা যায়, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে দুই হাজার ১৭০ জনকে ১০টি জোনে আলাদা করে নিয়োগ দেখায় ওয়াসা। বিধান অনুযায়ী, ওয়াসা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকার পূর্ত কাজ করার ক্ষমতা থাকলেও কৌশলে নিয়োগের প্রতিটি লটের কাজের মূল্য দেখানো হয় এক কোটি ৯৯ লাখ ৯ হাজার টাকা। কোথাও আবার এক কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
আউট সোর্সিং কর্মীদের অন্যতম কাজ বিলিং সহকারী হিসেবে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পানির বিল বিতরণ করা। কিন্তু বিশাল এই জনবল বসিয়ে রেখে সেই দায়িত্ব আবার দেওয়া হয়েছে চারটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানকে।
এখানেও টেন্ডার প্রক্রিয়ার বাইরে পছন্দের প্রতিষ্ঠানের কাজ পাওয়ার অভিযোগ আছে। এক্সপ্রেস টু বিজনেস সার্ভিসেস নামের প্রতিষ্ঠান কাজ পায় ২০২১ সালের অক্টোবরে। কিন্তু তখন ওই প্রতিষ্ঠানটির কুরিয়ার সার্ভিসের কোনো নিবন্ধনই ছিলো না।
এদিকে সবগুলোর জোনে কাজ দেয়ার পরও এটিকে পাইলট প্রকল্প দেখিয়ে কৌশলে ওয়াসা বোর্ডকে পাশ কাটিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ওয়াসা বোর্ড জানিয়েছিল, এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তারা পুরোপরি অন্ধকারে। তবে একাত্তরে সংবাদের পর এবার সেই অন্ধকার কাটলো।