মার্চেই ভারত থেকে সুবিধাজনক দামে মিলবে বিদ্যুৎ (ভিডিও)

SHARE

ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মিত আদানি গ্রুপের এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আগামী মাসেই বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে তৈরি হয়েছে আলাদা সঞ্চালন লাইন।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, আদানির বিদ্যুৎ পাওয়া ও এর দাম নিয়ে যে প্রচার চলছে তার কোনো ভিত্তি নেই। নির্ধারিত সময়ে, সুবিধাজনক দামেই এই বিদ্যুৎ মিলবে।

ভারতের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানি করার বিষয়ে ২০১৫ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়।

Advertisement

চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানির একটি বৈঠক হয় ভারতের আহমেদাবাদে। সেই বৈঠক শেষে গৌতম আদানি জানান, বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে পাশে থাকতে চায় আদানি গ্রুপ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে। উন্নয়নের ধারায় বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। সেই চাহিদা পূরণে ঝাড়খণ্ডে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবে আদানি গ্রুপ। শুধু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির জন্য করা হবে আলাদা গ্রিড লাইন।

বিদ্যুৎ বিনিময়ে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে তখন আশাবাদ জানিয়েছিলেন গৌতম আদানি।

আদানি গ্রুপ ভারতে কয়লা থেকে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এ ছাড়াও সৌর বিদ্যুৎ চার হাজার ৮০৩ মেগাওয়াট, বায়ু থেকে ৬৪৭ মেগাওয়াট ও ৩৯০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করছে আদানি।

Advertisement

ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট এখন প্রস্তুত। দ্বিতীয় ইউনিটে কাজও প্রায় শেষ।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেখতে ভারত সফরে যান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ একটি প্রতিনিধি দল। ঘুরে দেখেন দুই ইউনিটের যন্ত্রপাতি, কন্ট্রোল রুমসহ সার্বিক প্রস্তুতি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ঝাড়খণ্ডের এই কেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে আড়াইশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই এই কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ। জুনে পুরো কেন্দ্র থেকে মিলবে প্রায় এক হাজার ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

নসরুল হামিদ বলেন, ভারতের এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে নিতে গ্রিড লাইনের কাজও শেষ হয়েছে। গ্রিডের খরচসহ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে প্রায় ১৭ টাকা। তবে বিশ্ববাজারে কয়লার দাম কমে এলে বিদ্যুতের দামও কমবে।

এই মুহূর্তে দেশের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন খরচও ইউনিট প্রতি ১৬ টাকা। সেই সাথে আছে প্ল্যান্ট তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ, কোল টার্মিনাল,পরিবহন, পরিবেশ সংক্রান্ত নানা ইস্যু; সব মিলে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রশ্ন। সব বিবেচনা করেই আমদানির সিদ্ধান্ত।

আদানি পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিল সর্দানা জানালেন, বিদ্যুৎ না দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা নেবে না আদানি। এটি ভারতের সবচেয়ে আধুনিক আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

অনিল সর্দানা বলেন, এটি ভারতের প্রথম আলট্রা সুপার ক্রিটিকাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ না দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোন টাকা নেবে না আদানি পাওয়ার। অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া কিংবা আফ্রিকা যেখানে কম দামে কয়লা পাওয়া যাবে সেই কয়লাই এখানে ব্যবহার হবে। তাই এখান থেকে সুবিধাজনক দামেই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ পাবে।

Advertisement

আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ আনা নিয়ে শঙ্কা ও এর দাম বেশি পড়বে এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। তবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, মার্চেই আসবে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ। দামও হবে দেশের অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে প্রতিযোগিতামূলক।

কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আদানি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত গ্রিড লাইন নির্মাণ করেছে। একই লাইনে আরও এক হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহেরও প্রস্তাব দিয়েছে আদানি পাওয়ার।