এএসআইকে একাধিকবার ধর্ষণের আরেক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে

SHARE

বরগুনায় পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন আরেক এএসআই। চেতনানাশক খাইয়ে ধর্ষণ ও নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিনি মামলাটি করেন।

Advertisement

ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান খান মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পটুয়াখালীকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী আব্দুল মহসিন মতিন মামলার বিষয়টি ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত রায়হান তালুকদার তালতলী থানায় এএসআই পদে কর্মরত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী ও অভিযুক্ত রায়হান তালুকদার উভয়ই বরগুনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন। বাদীর স্বামী ভোলা সিআইডি জোনে কনস্টেবল পদে কর্মরত অবস্থায় ২০২১ সালের ১২ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে একই স্থানে একই পদে চাকরি করার সুবাদে বাদীকে প্রেম নিবেদন শুরু করেন এএসআই রায়হান তালুকদার। আসামি তার মোবাইলে মেসেজ ও কুরুচিপূর্ণ ছবি পাঠাতেন।

Advertisement

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ২৮ মে একটি জিআর মামলার সাক্ষ্য দিতে ভোলার জুডিসিয়াল আদালতে রওনা দেন বাদী। আসামি তা জানতে পেরে তার পিছু নেন। পরে বরিশালে তাদের দেখা হয়। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলের কাছে একটি ফাস্টফুডের দোকানে নিয়ে বাদীকে কোল্ড ড্রিংকস পান করতে দেন আসামি।

ওই পানীয় পানের সঙ্গে সঙ্গে বাদী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরলে একটি আবাসিক হোটেলে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় নিজেকে দেখতে পান। আসামিকে তাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। পরে আসামি রায়হান বলেন, তিনি তার নগ্ন ছবি মোবাইলে তুলে রেখেছেন। এরপর বিভিন্ন সময় ছবির কথা বলে ব্ল্যাকমেল করা শুরু করেন। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন রায়হান।

আসামি বাদীর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন সময় সাত লাখ টাকা নেন এবং বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকেন। এসব বিষয়ে বাদী পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানোর চেষ্টা করলে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন রায়হান।

মামলায় ভুক্তভোগী পুলিশ কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, আসামি একইভাবে প্রতারণা করে সবশেষ ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর রাতে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তখন তাকে কাবিননামা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন বাদী। একই সঙ্গে তার কাছ থেকে নেওয়া সাত লাখ টাকা ফেরত চান। এতে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরিক সম্পর্ক ও টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

Advertisement

এ ঘটনায় ৭ ফেব্রুয়ারি বরগুনা সদর থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি বলেও অভিযোগ বাদীর। পরে তিনি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে এএসআই রায়হান তালুকদারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সংযোগ কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে বলেন, মামলার বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় পুলিশ সুপার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন।