ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, রোববার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বছরজুড়েই সক্রিয় ছিল সুযোগ সন্ধানীরা। কখনও ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগিয়ে, আবার কখনও আর্থিক অনিশ্চয়তার গল্প ফেঁদে ফায়দা লুটেছে তারা। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেও ছড়ানো হয় বিভ্রান্তিকর তথ্য। আর গুজবে কান দিয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, বিদায়ী বছরের উল্লেখযোগ্য কিছু গুজব ও তার পরিণতি-
প্রযুক্তির বিকাশে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই এখন হাতের মুঠোয়। তবে সহজ এই প্লাটফর্ম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে অসাধু কিছু মানুষের কারণে।
বছরের অন্যতম ক্ষতিকর তথ্য ছড়ানো হয় আর্থিক খাত নিয়ে। ব্যাংক দেউলিয়ার গুজবে কান দিয়ে দুই মাসে ৫০ হাজার কোটি টাকার আমানত তুলে নেন গ্রাহকরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতি। এই গুজব দেশ ও বিদেশ থেকে ছড়ানো হয়। মামলার পর কয়েকজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
নিত্যপণ্য নিয়ে গুজবে পণ্যের দাম বাড়ায় ভুগতে হয় সাধারণ ভোক্তাদের। মার্চ-এপ্রিলে গুজব রটে শ্রীলঙ্কার মতো হবে দেশ। তবে পরিস্থিতি সেদিকে যায়নি। আইএমএফের ঋণ অনুমোদন সন্দেহ বাতিকগ্রস্তদের ভুল ভাঙায়।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়েও ছড়ানো হয় গুজব। টোল প্লাজা কাজ করবে না, সংযোগ সড়কে স্থায়ী হবে যানজট, স্থবির হবে রাজধানী- এমন নানা প্রচারণা চলে। তবে সেসব ভুল প্রমাণ করে সচল হয় পদ্মা সেতু। উদ্বোধনের পরও অপচেষ্টা থামেনি। নাটবল্টু খুলে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়। পরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধারাবাহিক ছিল ধর্ম নিয়ে উসকানির গুজবও। ১৮ জুন ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে নড়াইলে পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষককে জুতার মালা পরানো হয়। ওই মামলায় তার কোনো দোষ পাওয়া যায়নি। অথচ ঘটনার রেশ ধরে ১৫ জুলাই নড়াইলের সাহাপাড়ায় হিন্দু বাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়।
একই সময় সামাজিকমাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়। একটি রাজনৈতিক দল এ নিয়ে বিবৃতিও দেয়। অথচ কারিকুলাম বোর্ড জানায়, ধর্ম শিক্ষা বাদ দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্তই হয়নি।
আলোচনায় ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মরিয়ম মান্নানের মা’র নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তাদের ধারণা, পারিবারিক বিরোধ কিংবা প্রতিবেশীকে ফাঁসাতেই স্বেচ্ছায় ঘর ছাড়েন তিনি। বছরের শেষ ভাগে ব্যক্তিগত জমিতে চাষ না করলে তা খাস হবে বলে গুজন রটানো হয়। তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই।
ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়ানো কোনো তথ্য যাচাই না করে বিশ্বাস না করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।