ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),সিলেটের গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২ : সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বাচ্চু মিয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুজনও পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ সাংবাদিকদের জানান, আসামি বাচ্চু মিয়া, জব্বার মিয়া ও সেবুল মিয়া নিয়মিত ইয়াবা সেবন করত। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় ছিঁচকে চুরির অভিযোগ রয়েছে।
তিনি জানান, গত ১১ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বাচ্চু মিয়া, জব্বার মিয়া ও সেবুল মিয়া জব্বারের ঘরে বসে ইয়াবা সেবন করে। একপর্যায়ে তারা মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। পরে কেক, বিস্কুট ও কোমল পানীয়র লোভ দেখিয়ে তামাবিল পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন বাজার থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে স্থানীয় একটি টিলায় নিয়ে যায়। সেখানে তিনজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে বাধা দিলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে লাঠি ও পাথর দিয়ে ওই নারীর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
পরে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শেখ মো. সেলিম, গোয়াইনঘাট সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ এবং গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে সিআইডি ও পিবিআইয়ের ফরেনসিক টিম নিহতের পরিচয় শনাক্তের জন্য মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ঘটনার আলামত সংগ্রহ করে।
এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম খান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ১২ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করেন। সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের দিকনির্দেশনায় ক্লু-লেস মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এমরুল কবির এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করেন।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি কেএম নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা তা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অজ্ঞাত ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করত। রাতে তামাবিল পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন বাজারে কাশের পাগলার ভাঙারির দোকানের সামনে ও আশরাফের বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত ঘরে রাতযাপন করত বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
