বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ : বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের মিডিয়া উইং এর পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে মঈন জানান, মামালার প্রেক্ষিতে তদন্তকারী সংস্থা ছাড়াও র্যাব এ মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। আমরা ফারদিনের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলি। এ ঘটনা দেশজুড়ে বেশ আলোচিত হয়। আমরা বিভিন্ন তথ্য-প্রযুক্তি, গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করি।
র্যাব জানায়, গত ৪ নভেম্বর বিকেলে রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়া নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশে বের হয় ফারদিন। বিকেল আনুমানিক ৫ ঘটিকায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তার পরিচিতার সঙ্গে দেখা করে। অতঃপর সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমন্ডিসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করে।
অতঃপর রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে তিনি রিক্সাযোগে রামপুরায় যান। পরে আনুমানিক রাত পৌনে ১০ ঘটিকায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তিনি রিক্সা হতে নেমে যায় এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন।
র্যাব আরও জানায়, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায়, পরবর্তীতে তিনি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় গমন করে।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আরও জানা যায় যে, রাত ২.০১ ঘটিকায় (সিসিটিভি ফুটেজ টাইম ২.০৩ ঘটিকা) যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা হতে নিহত ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ২.২০ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায় ফারদিন।
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২.২৬ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিল। অতঃপর রাত ২.৩৪ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসে ফারদিন। উল্লেখ্য যে, ব্রিজের তারাবো প্রান্ত হতে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দুরত্ব আনুমানিক ৪০০-৫০০ মিটার। রাত ২.৩৪ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে ফারদিন এবং রাত ২.৩৪.১৬ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেয় ফারদিন। ঝাঁপ দেয়ার পর রাত ২.৩৪.২১ ঘটিকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে ফারদিন। রাত ২.৩৫.০৯ ঘটিকায় ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও রাত ২.৫১ ঘটিকায় ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
র্যাব আরও জানায়, সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে যে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ হতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে।
এদিকে ফারদিনকে হত্যা করা হয়নি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।