ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বরগুনার তালতলী প্রতিনিধি,শনিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ : বরগুনার তালতলী উপজেলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিজের বাবার কবর ভাঙচুর করেছেন এক ব্যক্তি।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য পাওয়া যায়। এর আগে শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার মালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আলম হাওলাদার উপজেলার মালিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
জানা গেছে, উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের নসু হাওলাদার প্রায় ৩০ বছর আগে মারা যান। তার মৃত্যুর পর রেখে যাওয়া জমিজমার মালিক হয় তিন ভাই ও চার বোন। এই জমি নিয়ে বড় ভাই আলম হাওলাদারের সঙ্গে অন্য ভাই-বোনদের বিরোধ চলে আসছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী সব ভাই-বোনদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু বড় ভাই আলম তাতে রাজি হননি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ভিটে বাড়ির জমি ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই সময় বড় ভাই আলমের আপত্তির কারণে কৃষি জমি ভাগ করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় কৃষি জমি দখল করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এ ছাড়া আলমের বাবা বেঁচে থাকতে চিকিৎসা করানোর কথা বলে বরিশালে নিয়ে যান তিনি। সেখানে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বেশির ভাগ জমি লিখে নেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে অন্য দুই ভাইকে এলাকা ছাড়া করেন তিনি। তবে বোনেরা বাবার জমিজমার ভাগ চাইলে তাদের ছেলে মেয়েদেরও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনার জেরে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মেজো বোন পারুলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে আলম হাওলাদার তার বাবার কবরটি ভাঙচুর করে। এ সময় বলতে থাকেন ‘বেশি সন্তান কেন জন্ম দিল, তাকে একা কেন জন্ম দিল না।’ পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে কবরটি পুরোপুরি ভাঙতে পারেনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ বিষয়ে আলম হাওলাদারের মেঝো বোন পারুল বলেন, আমি আমার বাবার সম্পত্তির ভাগ চাইতে গেলে তিনি (আলম) আমাকে লাথি মেরে পাঠিয়ে দেয়। বাবা কেন বেশি সন্তান জন্ম দিল, সেই অপরাধে কবরে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। পরে হামার (লোহার শক্ত বস্তু) দিয়ে কবরটি ভাঙচুর করেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে আলম হাওলাদার বলেন, আমাদের জমিজমা নিয়ে আদালতে মামলা চলে। পারিবারিক কবর বড় করার জন্য ভেঙে ফেলেছি, এটা সত্যি। বেশি সন্তান জন্ম দেওয়ার কোনো কথা আমি বলিনি। এটা আমার বোনেরা অন্যদের ইন্ধনে বলছে। আমার বোনেরা জমি যা পাবে, তার চেয়ে বেশি দখল করে রেখেছে।
এ বিষয়ে তালতলী থানার অফিসার ইনর্চাজ কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ বিষেয় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।