ক্ষেতের আখ থেকে যেভাবে তৈরি হয় কেরুর মদ (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),দর্শনা চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, শনিবার , ২০ আগস্ট ২০২২ : ক্ষেতের আখ থেকে কয়েক ধাপ পেরিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে অ্যালকোহল। দেশের একমাত্র মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেরু এন্ড কোং। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় অবস্থিত প্রায় ৮৪ বছরের পুরনো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই কোম্পানিটি দেশের অন্যতম প্রধান চিনিকলও বটে।

চিনির উপজাত থেকে তৈরি হচ্ছে মদ। আখ থেকে চিনি উৎপাদনের পর যেসব উপজাত পাওয়া যায়, তার মধ্যে একটি মোলাসিস বা চিটাগুড়। কয়েকটি ধাপে পরিশোধনের পর যা থেকে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরণের স্পিরিট ও অ্যালকোহল। অবাক করা ব্যাপার হলো, চিনিতে ক্রমাগত লোকসান গুনলেও সাম্প্রতিক সময়ে কেরুর বিক্রি ও লাভের যত রেকর্ড তার সবটুকুই মদ বেচে।

কোভিডের সময় থেকেই দেশে বাড়তে থাকে কেরুর উৎপাদিত বিভিন্ন রকম মদের চাহিদা। বিক্রির পালে হাওয়া লাগে আমদানিকৃত এলকোহলের শুল্কে কড়াকড়ি আরোপের পর। এরপর থেকেই কেরুর আয় বেড়েছে অনেকটা যেন জ্যামিতিক হারে। চলতি বছর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানটির মোট বিক্রি ছাড়ায় ৪০০ কোটি টাকা, যার ৩৬৭ কোটিই এসেছে এলকোহল বিক্রি করে। মুনাফাতেও হয়েছে রেকর্ড ১০০ কোটি টাকার বেশি।

কেরু এন্ড কোং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, আমাদের ডিস্টিলারীতে দুইটা প্লান্ট। যার একটি ব্রিটিশ প্লান্ট, এর উৎপাদন ক্ষমতা ৪৫ লাখ প্রুভ লিটার আর অন্যটি ইন্ডিয়ান প্লান্ট যার উৎপাদন ক্ষমতা ৯০ লাখ প্রুভ লিটার। এছাড়া দুই প্লান্টে বছরে উৎপাদিত হয় ১ কোটি ৩৫ লাখ প্রুভ লিটার।

কেরু অ্যান্ড কোং এর ডিস্টিলারি ইউনিট ৩ টি সাইজের বোতলে নয়টি ব্র্যান্ডের মদ তৈরি করে। উৎপাদনের পুরো প্রক্রিয়াটিই হয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। কর্মকর্তারা বলছেন, পরিকল্পনা আছে অটোমেশনের।

কেরু এন্ড কোং এর মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারী) মো. ফিদা হাসান বাদশাহ জানান, এখানে মূলত দেশি ও বিদেশি মদ তৈরি হয়। দিন দিন কেরু এন্ড কোং এর উৎপাদিত মদের চাহিদা বাড়ছে। তবে এটা যদি আরও বাড়তে থাকলে ম্যানুয়ালি আর উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। তখন অবশ্যই অটোমেশন পদ্ধতিতে যেতে হবে। এছাড়া বিদেশি অ্যালকোহল আরও বৈচিত্র্য আসবে।

দেশব্যাপী ৩ টি বিক্রয়কেন্দ্র ও ১৩ টি ওয়্যারহাউজের মাধ্যমে হয় কেরুর বাজারজাতকররণ প্রক্রিয়া। কর্তৃপক্ষ বলছে, উৎপাদন প্রক্রিয়া আধুনিক করা গেলে আয় বাড়বে কয়েক গুণ।