ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নাটোর প্রতিনিধি,১৪ আগস্ট ২০২২ : নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করে সারা দেশে ভাইরাল হওয়া খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে লাশের শরীরে আঘাতে কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন রা।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক (আরএম্ও)সামিউল ইসলাম শান্ত জানান, শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। লাশের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ভিসেরা রিপোর্ট আসলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে ময়নাতদন্ত করা হয়।
রোববার সকালে পুলিশ মামুনকে আটকের সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে মামুন বলেন, খায়রুন নাহারের বিভিন্ন ব্যাংক ও এনিজওতে ১৬লাখ টাকার বেশি ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে তার ছেলে ৬ লাখ টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এ সব বিষয়ে খায়রুন নাহার মানসিকভাবে খুবই চাপে ছিল। তাই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের ভাতিজা নাহিদ হাসান বলেন, নতুন এ বিয়ের পর থেকেই মামুন তার ফুফুর কাছ থেকে মোটরসাইকেলসহ প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। নতুন করে আবার আর ওয়ান-৫ মোটর সাইকেল কিনে দেয়ার জন্য ফুফুকে চাপ দিচ্ছিল। তিনি বলেন, মামুন নেশা করতো। মামুনের চাপেই তার ফুফু আত্মহত্যা করেছে।
নিহত সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবির উদ্দিন বলেন, অসম বয়সের বিয়ে হওয়ায় খায়রুন নাহারের কলেজের কোন সহকর্মী তার সঙ্গে কথা বলতো না। বাবা-মাসহ আত্বীয়স্বজনরা যোগাযোগ রাখতো না। বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ায় খাযরুন নাহার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মামুনের কোন স্বজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার বাবা মোহাম্মদ আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ। তার চাচা আহম্মদ আলী মেম্বারকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার পর নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, পিবিআই পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিন ও সহকারী পুলিশ সুপার মহসিনসহ প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় পিবিআই পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিন বলেছেন, সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও তদন্ত অগ্রসর হলে এ বিষয়ে পরিস্কার কিছু বলা যাবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেছেন, বিষয়টি আত্মহত্যার মতোই মনে হচ্ছে। সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে যে ভাবে ওড়না আগুন দিয়ে পুড়িয়ে খায়রুন নাহারকে তার স্বামী নামিয়েছেন এটা বিশ্বাসযোগ্য। কাপড় এবং ফ্যানের কিছু অংশ পোড়া অবস্থায় দেখা গেছে। তারপরও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত স্বামী মামুন বাইরে থাকাসহ সবগুলো পয়েন্ট মাথায় রেখেই পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেছে। মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে এবং পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।