ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ইসলাম প্রতিনিধি,২২ জুলাই ২০২২ : যে মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত, সেই নারীদের প্রতি পুরুষের কুদৃষ্টি নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী।
শুধু তাই নয় অবৈধ যৌনাচার (যিনা-ব্যভিচার) থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজে দিন দিন অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বেড়েই চলেছে। অবাধ যৌনাচার ও নারীপুরুষের মেলামেশা যেন এক ধরনের সামাজিক বৈধতা পেয়ে গেছে (নাউজুবিল্লাহ)। ফলে বাড়ছে সামাজিক ও নৈতিক বিপর্যয়।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘হে নবি আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা ও মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের একাংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আহযাব : ৫৯)।
হাদিস শরিফেও পর্দার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু। যখন সে পর্দাহীন হয়ে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। (জামে আত-তিরমিযী : ১১৭৩)।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, (হে নবি) মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে তবে যা সাধারণত (অনিচ্ছা সত্ত্বে) প্রকাশিত হয়ে যায় তা ভিন্ন। তারা যেন ওড়না দিয়ে তাদের বক্ষকে আবৃত করে রাখে।
আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্য কারও কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন তাদের গোপন সাজ্জসজ্জা প্রকাশ করার উদ্দেশে সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনরা, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফল হতে পার। (সূরা নূর : ৩১)।
নারী নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধে পবিত্র কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী পুরুষকে নারী থেকে তাদের দৃষ্টি অবনত রাখা ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করে চলতে হবে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সূরা নুর ৩০)।
নারীদের মায়ের মর্যাদা দিয়ে বিশ্বনবি (সা.) বলেছেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত’। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার এক লোক মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর দরবারে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশি অধিকারী কে? নবিজি (সা.) বললেন, ‘তোমার মা’।
ওই লোক জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি উত্তর দিলেন ‘তোমার মা’। ওই লোক আবারও জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? এবারও তিনি উত্তর দিলেন ‘তোমার মা’। (সহিহ বুখারি)।
ইসলামি জীবন দর্শনের প্রতিটি পর্বে দৃষ্টিপাত করলে সুস্পষ্টভাবে যে চিত্র ফুটে ওঠে, তা হচ্ছে ইসলামে রয়েছে নারী ও পুরুষের ন্যায্য অধিকার। তাই নারী নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধে ইসলামি অনুশাসন মেনে চলার বিকল্প নেই।