ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২ : বিশ্বের অন্যতম ‘ইঞ্জিনিয়ারিং মার্ভেল’ বা প্রকৌশল বিস্ময় পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পরেই আওয়ামী লীগের জনসভা। এসব কেন্দ্র করে উৎসব, উচ্ছ্বাসে মেতেছে পদ্মা পাড়ের মানুষ।
জনসভাকে ঘিরে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় চলছে নানা প্রস্তুতি। নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা। চলছে নানা মহড়া।
জাতীর জীবনের সবচে গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত। মাওয়া প্রান্তে সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের দুই পাড় সেজেছে নতুন সাজে।
শনিবার সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে উড়ে এসে মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার ইস্পাত দৃঢ় সংকল্পেই পদ্মা বুকে মাথা উঁচু করেছে সেতু।
দেশি-বিদেশি চারশ’ অতিথি যোগ দেবেন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবের এই আয়োজনে। সেখানেই যোগ দেবেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক।। থাকবেন রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্টজনেরা।
সেখানে নিরাপত্তা মহড়াসহ রাষ্ট্রীয় এই আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আকাশপথে হেলিকপ্টারেও হয়েছে বর্ণাঢ্য মহড়া। যা বজায় থাকবে ২৫ তারিখ সেতুর উদ্বোধনের দিনও।
মাওয়া প্রান্তের সুধী সমাবেশ শেষে টোল প্লাজায় টোল দিয়ে সেতু পাড়ি দেবেন প্রধানমন্ত্রী। যোগ দেবেন জাজিরা প্রান্তের নাগরিক সমাবেশে। শেষ হয়েছে সেই প্রস্তুতিও।
বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় ১১টি পিলারের ওপর দশটি স্প্যান বসিয়ে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা হয়েছে একটি ছোট প্রতীকী সেতু। এর ঠিক ওপরেই বসানো হয়েছে উদ্বোধনী মঞ্চ।
মঞ্চের ঠিক সামনে পানিতে ভেসে থাকতে দেখা যাবে বিশালকার এক নৌকাসহ কয়েকটি ছোট নৌকা। কঠোর নিরাপত্তার জন্য সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা।
শনিবার পদ্মা সেতু প্রান্তে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট মাঠে বেলা ১১ টায় হবে আওয়ামী লীগের জনসভা। যেখানে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা।
র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, সেনাসদস্য, এসএসএফসহ নানা বাহিনীর তৎপরতায় এটি এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রূপ নেবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে শুধু জনসভাস্থলই নয়, সারাদেশেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
তিনি জানান, সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনসভাস্থল শেষে সবাই যেন নিরাপদে বাড়ি চলে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পুলিশ প্রধান আরও বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশ বাহিনীও উদযাপন করবে। এ জন্য সারাদেশের পুলিশ সদস্যরা বাহিনীর পক্ষ থেকে আনন্দ-উৎসব করবে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে কমপক্ষে অন্তত ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে এই জনসভায়। সভাস্থলে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। উৎসবের আমেজে চলছে সাজসাজ রব।
জনসভায় দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা ছাড়াও সারাদেশ থেকে আসতে শুরু করেছেন নেতা ও কর্মীরা। দেশের বাইরে থেকেও পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন মানুষ।
সমাবেশে নৌ পথে আসবেন অসংখ্য মানুষ। নৌপথে আসা মানুষের জন্য বাংলাবাজার ঘাটে অস্থায়ীভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ১৫টি ঘাট। লঞ্চ এসে এ সকল ঘাটে ভিড়বে।
জনসভার প্রস্তুতি দেখতে এসে আওয়ামী লীগের নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এ জনসভা একটি ঐতিহাসিক জনসভা। প্রধানমন্ত্রী শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন।
বাঙালি জাতি অপেক্ষা করছে সে মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এই জনসভা হবে চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জনসভা।
জনসভার সমন্বয়কারী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, জনসভার শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জনসভা স্থলে তিনটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়।
জনসাধারণের স্যানিটেশন ও পানীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৭ মার্চের জনসভার পর পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জনসভা হবে সবচেয়ে বড় জনসভা বলে জানান তিনিও।