ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা ধামরাই প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ০৭ জুন ২০২২ : চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি। ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে বিবাহবার্ষিকীর আয়োজন চলছিল, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেনের গ্রামের বাড়িতে। সারাদিনের ব্যস্ততা সেরে স্বপরিবারে ঘুমাতে যান তিনি। কিন্তু স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি, কি ভয়ানক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে চলেছেন!
সেদিন মধ্যরাতে অসুস্থ স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী ছেলেসহ সাবেক রাষ্ট্রদূতকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৯-১০ জনের একটি ডাকাত দল। লুটে নেয় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১৪ লাখ টাকার মালামাল।
পালিয়ে যাওয়ার আগে চক্রটি খুলে নিয়ে যায় ডাকাতির প্রমাণ সিসিটিভির হার্ডডিস্কও। মালামাল খোয়া গেলেও অক্ষত রয়েছেন সোহরাব হোসেন এবং তার পরিবারের সদস্যরা।
রাজধানীর উপকন্ঠে এমন দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা স্থানীয়দের ঘুমই কেবল কেড়ে নেয়নি, অস্থিরতা বাড়িয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাঝেও। ফলে ক্লুলেস এসব ডাকাতির ঘটনা চিহ্নিত করতে মাঠে নামে জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর বিশেষ গোয়েন্দা দলও।
তথ্য-প্রযুক্তির নানা কৌশল ব্যবহার করে এই ডাকাতকে চিহ্নিত করে গোয়েন্দারা। এমনকি তাদের অবস্থান সম্পর্কেও একটা ধারণা পায়।
এদিকে সাবেক রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেনের ঢাকার ধামরাইয়ের বাসায় ডাকাতির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ডাকাতির সঙ্গে জড়িত।
এই ডাকাত দলের তৎপরতা নিয়ে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, তারা অনলাইনভিত্তিক ফুড ডেলিভারিম্যান, রংমিস্ত্রি, মুদিদোকানের কর্মচারী ও সিএনজি অটোরিকশাচালক সেজে ডাকাতির জন্য উপযুক্ত বাসা খুঁজে বের করেন। পরে সুযোগ বুঝে সেখানে ডাকাতি করেন।
সাবেক রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন বলেন, ওই রাতে স্ত্রী, সন্তান ও গৃহপরিচারকদের নিয়ে বাসায় অবস্থান করছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে দরজায় কড়া নেড়ে আচমকা ১৪ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি তার শোবার ঘরে ঢুকে পড়েন। চোখের পলকে তারা সবার হাত-পা বেঁধে ফেলেন। ডাকাতেরা তাঁর স্ত্রীর সব স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।
পরদিন ভোরে সোহরাব হোসেন জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। এরপর পুলিশ তার বাসায় যায়। সোহরাব হোসেন বলেন, আমার ভাই বেনজীর আহমেদ ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য। আমার নিজের একটা পরিচয় আছে। এমন কিছু ঘটবে, কল্পনাও করিনি।