যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চলেন ‘এয়ারফোর্স ওয়ানে’। বিশ্বের আরও সব ক্ষমতাধর দেশের সরকার আর রাষ্ট্রপ্রধানদেরও আছে নিজস্ব ব্যবহারের জন্য সরকারি জেট। কিন্তু জি-টুয়েন্টিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ব্রিটেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রাইভেট জেটে চলাচল করবেন- ব্রিটিশরা বরাবরই এটাকে একটা অনাবশ্যক জাঁকজমক এবং বিলাসিতা হিসেবে দেখেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার একবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার ব্যবহারের জন্য দুটি ব্যক্তিগত জেট কেনার। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল তখন। সমালোচকরা কটাক্ষ করে এর নাম দিয়েছিলেন ‘ব্লেয়ার ফোর্স ওয়ান’।
টনি ব্লেয়ারের উত্তরসূরি গর্ডন ব্রাউন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অবশ্য এই প্রকল্প বাতিল করে দেন। তবে এবার কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের জন্য আবার ব্যক্তিগত জেট কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যমে এ নিয়ে আবারও তির্যক মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। এবার এই প্রকল্পকে ‘ক্যাম ফোর্স ওয়ান’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর একটি ভয়েজার এ-থ্রী-হান্ড্রেড-থার্টি বিমানকে প্রধানমন্ত্রীর উপযোগী করে সাজানো হবে। এই বিমানটিতে আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় তেল ভরা যায়।
সরকার অবশ্য যুক্তি দিচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এয়ারফোর্স ওয়ানের তুলনায় এটি কিছুই নয়। এতে বরং প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের খরচ কমবে- ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে বিরোধী লেবার পার্টি বলছে, সেটা বলার সময় এখনো আসেনি। প্রকৃত খরচ জানা যাবে যখন বিমানটি তৈরি হয়ে আসবে তখন।
ইউকিপ বলে যে ইমিগ্রেশনবিরোধী কট্টর ডানপন্থী দল, তার এক এমপি ডগলাস কার্সওয়েল বলেছেন, রাজনীতিকরা হয়তো ভাবতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এ রকম একটা বিমান থাকাটা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু সাধারণ মানুষ ব্যাপারটাকে সেভাবে দেখবে না।
অন্য অনেকের আশংকা, এ রকম ব্যক্তিগত বিমান আসলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আরও বেশি দূরে সরিয়ে দেবে।
সাধারণ মানুষের এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই হয়তো এতদিন পর্যন্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রাইভেট জেট কেনার সাহস করেনি কোন সরকার।