ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ০৮ মার্চ ২০২২ : ভুয়া ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহার করে সাহায্যের নামে গল্পের ফাঁদ। টার্গেট ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি। বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। করোনাকালীন দুই বছরে মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটির প্রত্যেক সদস্য।
কখনো মসজিদের ইমাম কখনো মোয়াজ্জেম পরিচয় দিয়ে টার্গেটকৃত ঢাকা শহরের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের ফোন দিত একটি চক্র। ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে, খরচ না দিতে পারায় লাশ বের করতে দিচ্ছে না এমন গল্পের ফাঁদে জনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ বিষয়ে সিআইডিতে অভিযোগ করলে সংঘবদ্ধ চক্রটির মূল হোতা আব্দুল মান্নান শেখসহ ৫ জনকে মিরপুর ও তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) এক ব্রিফিংয়ে সিআইডি জানায়, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের তথ্য সম্বলিত ৫০টি ডাইরেক্টরি বই উদ্ধার করা হয়। এসব ডাইরেক্টরি ঘেটে তারা টার্গেট নির্ধারণ করত। ডাইরেক্টরিতে কে কত টাকা দিয়েছে, কে কখন দেবে, কে কেমন ব্যবহার করেছে ইত্যাদি কমেন্ট লিখে রাখত।
সিআইডি’র অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ডাইরেক্টরি থেকে ছবি দেখে দেখে তারা মূলত চেষ্টা করে নারীদের টার্গেট করতে। আপনার জেনে আশ্চর্য হবে যে আমাদের সিআইডির এক উচ্চপদস্থ নারী অফিসারকেও তারা ফোন করেছিল। এ যাবৎ যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তাদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা আছে, এমপি ও ব্যবসায়ী আছে।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১৬টি সিমকার্ড ও ৮টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এসব মোবাইলের বিকাশ নম্বরের তথ্য পর্যালোচনা করে সিআইডি জানতে পারে, চক্রের সদস্যরা একেকজন প্রতি মাসে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিত।
ইমাম হোসেন বলেন, বিকাশ নাম্বারগুলো আমরা ঘেটে দেখলাম কেউ ২০ হাজারের নিচে টাকা দেই না। মাস শেষ তাদের একাউন্ডে বড় অংকের টাকা থাকত। মাদ্রাসার টাকা তুলতে গিয়ে তারা ভাবল যে এভাবে টাকা তোলা তো ভালো একটা খাত, কোনো রিস্ক নেই কোনো ঝামেলা নেই।
আসামিরা করোনাকলীন দুই বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রতারণা করে আসছিল বলে জানায় সিআইডি।