ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। রাজধানীর উত্তরখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রটি ডিজিটাল প্লাটফর্মে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে আসছিল। উত্তরখানের নামসর্বস্ব সিনথিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছিল চক্রটি।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন প্রতিষ্ঠানের এমডি সামসুন্নাহার ওরফে মায়া (৩৩), জিএম মো. জুয়েল ভূইয়া (২৬), ডিজিএম কামরুজ্জামান ওরফে ডেনিস (২৪), রিসিপশনিস্ট ফারহানা ইয়াছমিন ওরফে সুবর্ণা আক্তার (২৩), মার্কেটিং অফিসার মেহেদী হাসান (২১), মার্কেটিং অফিসার আল মামুন ওরফে মাসুদ (২১) ও তাজবির হাসান ওরফে লোহান (১৯)।
আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল প্লাটফর্মে চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আসছিল। অনলাইনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি চক্র প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে বলে জানা যায়। পরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১ ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার রাতে র্যাব-১ এর একটি দল উত্তরখান এলাকার আটিপাড়া বাজারের ‘মা মনোয়ারা সুপার মার্কেটের’ ৪র্থ তলায় সিনথিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লি. এর অফিসে অভিযান পরিচালনা করে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।অভিযুক্তদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ এমএলএম প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। সিনথিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামে তারা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তারা ডিজিটাল প্লাটফর্মে তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কম্পানিতে ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এবং তাদের অধীনে বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক, এটিএম বুথ, থ্রি স্টার অ্যাপার্টমেন্ট, গার্মেন্টস-টেক্সটাইল, মিল-ফ্যাক্টরি, বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্ট, মেট্রোরেল হেড অফিস, চায়না প্রজেক্টসহ আরো কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে কিছু কর্মচারী নিয়োগের জন্য তাদের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিত। পরে তাদের অফিস থেকে চাকরি প্রার্থীদের মোবাইলে ফোন দিয়ে একটি নির্দিষ্ট তারিখে অফিসে এসে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য বলা হয়। নির্দিষ্ট তারিখে চাকরি প্রার্থীরা ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য অফিসে আসার পর তাদের কাছ থেকে ভর্তি ফরম, ট্রেনিং এবং আইডি কার্ড বাবদ ১২ হাজার ৫০০ টাকা জামানত আদায় করা হত। তাদের জানানো হত পদ অনুসারে তাদের মাসিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হবে।পরে সিকিউরিটি অফিসে যোগ দিলে তাদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হতো প্রতি মাসে নতুন নতুন চাকরি প্রার্থী সংগ্রহ করতে হবে এবং নতুন প্রার্থী সংগ্রহের ভিত্তিতে কমিশন হিসেবে তাদের বেতন দেওয়া হবে। প্রতারণার বিষয়ে বুঝতে পেরে জামানতের টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা করত এবং টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানাত। গত ৮ মাস ধরে সিকিউরিটির গার্ড নিয়োগের নামে কম্পানি চলছিল। কিন্তু তারা কোনো সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দেয়নি।