ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২২ : রাজধানীর কলাবাগানের একটি ফ্ল্যাটে দিনের পর দিন বাথরুমে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন করা হতো ফারজানা আক্তার নামে এক গৃহকর্মীকে। শুধু তাই নয়, মারধরের পর জখমে মরিচের গুঁড়াও লাগিয়ে দেওয়া হতো। শরীরের নানান জায়গায় জখমের যন্ত্রণা এবং পাশবিক নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দিন পার করছেন ফারজানা।
জানা গেছে, রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন ফারজানা। ওই বাসার গৃহকর্ত্রী সামিয়া ইউসুফ ওরফে সুমির নির্মম নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারজানা। তারপর ওই গৃহকর্ত্রী ভয় পেয়ে ১৭ জানুয়ারি ফারজানার বাবাকে ফোন দিলে তারা এসে ফারজানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসাধীন এ অসহায় মেয়েটির অভিযোগ, মারধরের সময় চিৎকার করলে বা কাউকে বললে তার মা-বাবাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হতো। তাই সে নীরবে সহ্য করত সব নির্যাতন।
ফারজানা আক্তার জানান, তারা আমার পুরো শরীরে মেরেছে। বাথরুমে হাত-পা বেঁধে সারা রাত আমাকে মেরেছে। আমি আপুকে বলেছি, আমি আর মার খেতে পারছি না। আমাকে আমার মায়ের কাছে দিয়ে দেন। এ কথা বলাতে আমাকে আরও বেশি মারধরের হুমকি দিত।
শুধু তাই নয়, ওই বাসায় থাকা ফারজানার ছোট বোনটিও মারধরের শিকার হয়েছেন।
মেয়েটির মা জ্যোৎস্না বেগম জানান, আমরা অসচ্ছল, তাই মেয়ে দুটির ভালোর জন্য অন্যের বাসায় কাজে পাঠাই। এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে কল্পনাতেও ভাবিনি।
এদিকে এ ঘটনায় গত ২০ জানুয়ারি ফারজানার বাবা মামলা দায়ের করেন। এরপর ওই গৃহকর্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাব ২-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু নাঈম মোহাম্মদ তালাত বলছেন, আমরা ফারজানার যাবতীয় খোঁজখবর রাখছি।
রাজধানীর হাজারীবাগে বসবাসরত অসহায় পরিবারটি এ ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।