যেভাবে উদঘাটিত হলো শিমু হত্যার রহস্য

SHARE

শাখাওয়াত আলীম নোবেল, তার বন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ ও রাইমা ইসলাম শিমু

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বুধবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২২ : অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে তার স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদকে আটক করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দিনগত রাতে তাদের আটক করা হয়। এ সময় একটি গাড়িও জব্দ করা হয়।

এর আগে গতকাল সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জ আলীপুর ব্রিজের পাশ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সময় একটি প্লাস্টিকের দড়ির সূত্র ধরে রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। তারপরই শিমুর স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু এসএম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশের তদন্ত সূত্র জানায়, মরদেহ উদ্ধারের পর তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে শিমুর পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে ও শিমুর বাসায় গিয়ে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে। এ সময় একটি প্লাস্টিকের দড়ির সূত্র ধরে উদঘাটিত হয় হত্যার মূল রহস্য।

সূত্র জানায়, লাশ গুম করতে বস্তা দুটি যে প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে সেলাই করা হয়েছিল, সেই দড়ির হুবহু এক বান্ডিল শিমুর স্বামী নোবেলের গাড়িতে পাওয়া যায়। দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে গাড়িটি ধোয়া হয়।তাৎক্ষণিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোবেলকে আটক করে পুলিশ।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। শিমুর স্বামী জানান, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি শিমুকে গলাটিপে হত্যা করেছেন। ১৬ জানুয়ারি (রোববার) সকাল ৭টা-৮টার দিকে তিনি শিমুকে হত্যা করেন। এরপর ফরহাদকে মুঠোফোনে কল করে ডেকে নেন। পরে ফরহাদ ও নোবেল বাইরে থেকে বস্তা এনে শিমুর লাশ লম্বালম্বিভাবে দুটি পাটের বস্তায় ভরে প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে সেলাই করেন। এরপর বাড়ির দারোয়ানকে নাশতা আনতে বাইরে পাঠিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনের আসনে শিমুর লাশ নিয়ে বেরিয়ে যান। প্রথমে নোবেল ও ফরহাদ লাশ নিয়ে মিরপুরের দিকে যান। কিন্তু সেখানে লাশ গুম করতে না পেরে আবার বাসায় ফেরেন। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় আবার তারা লাশ গুম করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বছিলা ব্রিজ হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হজরতপুর ইউনিয়নের দিকে যান। সেখানে রাত সাড়ে নয়টার দিকে কদমতলী এলাকার আলীপুর ব্রিজের ৩০০ গজ দূরে সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর ফেলে দেন লাশটি।

পুলিশ জানায়, অভিনেত্রী শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা দুজনই মাদকাসক্ত ও বেকার।

মঙ্গলবার তাদের আসামি করে নিহতের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নোবেল ও ফরহাদকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। পরে আদালত তাদের দুইজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।