ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২২ : পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক সার্জেন্টের বাড়িতে কাজ করতে না চাওয়ায় ওই সার্জেন্ট এক গৃহকর্মী নারীকে তুলে আনতে তার বাড়িতে পুলিশ নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই নারীর নাম সাজেদা খাতুন। তিনি নগরীর শিরোইল এলাকায় ভাড়া থাকেন।
অভিযুক্ত সার্জেন্টের নাম মাহমুদ রানা। তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত।
গৃহকর্মী সাজেদা জানান, তিনি কয়েকটি বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। এরমধ্যে সার্জেন্ট রানার স্ত্রীর নানির বাড়িতেও কাজ করেন। সম্প্রতি রানার স্ত্রী সুমি খাতুন সন্তান প্রসব করেন। তাই সুমির নানি তাকে নাতনির বাড়িতে কয়েকদিন কাজ করতে পাঠান।
কিন্তু একসঙ্গে কয়েকটি বাড়িতে কাজ করেন বলে সাজেদা সার্জেন্ট রানার বাড়িতে কাজ করার সময় করে উঠতে পারছিলেন না সাজেদা। গত মঙ্গলবার সাজেদা জানিয়ে দেন, তিনি আর কাজে আসতে পারবেন না। তখন সার্জেন্ট রানা তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, কাজে না এলে তার নামে মিথ্যা মামলা করা হবে। তার বিরুদ্ধে বাড়ির সোনাদানা চুরির অভিযোগ করা হবে।
সার্জেন্টের এ হুমকি আমলে না নিয়ে সাজেদা পরদিন থেকে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দেন। হঠাৎ বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সার্জেন্ট মাহমুদ রানা নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল পুলিশ বক্স থেকে চারজন কনস্টেবলকে নিয়ে সাজেদার বাড়ি যান। সাজেদা তখন অন্য এক বাড়িতে কাজে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে তিনি জানতে পারেন, তাকে খুঁজতে বাড়িতে পুলিশ এসেছিল। সাদাপোশাকে আসা সার্জেন্ট মাহমুদ রানা আশপাশের লোকজনদের জানিয়ে গেছেন, সাজেদা নাকি তার বাড়ির গয়না ও টাকা চুরি করে এনেছেন।
গৃহকর্মী সাজেদা খাতুন আরও জানান, বাড়িতে পুলিশ যাওয়ায় শুক্রবার সকালে তিনি নিজেই বোয়ালিয়া থানায় যান। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা কিংবা অভিযোগ হয়েছে কি না খোঁজ নেন। তখন জানতে পারেন, তার বিরুদ্ধে কোন মামলা কিংবা অভিযোগ নেই। সার্জেন্ট রানা তাকে তুলে আনতে গিয়েছিলেন। এ কারণে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চুরির মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় তিনিই সার্জেন্টের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে বোয়ালিয়া থানার কর্তব্যরত অফিসার কোন মন্তব্য না করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন ফোন ধরেননি। সার্জেন্ট রানার মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে আরেকবার ফোন করলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার অনির্বান চাকমা জানান, আরএমপির সদর দপ্তর থেকে তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁরাও এ বিষয়ে তদন্ত করবেন।