ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ষ্টাফ রিপোর্টার,শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ : অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ইমোতে নারীকণ্ঠে কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। আর তাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছেন প্রবাসীরা। প্রবাসীদের ইমো আইডি হ্যাক করার পর ব্ল্যাকমেইলও করে তারা।প্রায় দেড় শতাধিক সদস্যের এই চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- হুসাইন আলী (১৯), সুমন আলী (২৩), তরিকুল ইসলাম (২১), শান্ত আলী (১৯) ও সাদ্দাম হোসেন (১৯)। গতকাল ২৩ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজধানীর আশুলিয়া ও নাটোর থেকে সিআইডি তাদের গ্রেফতার করে। ২৩ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো . কামরুল আহসান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নাটোর-রাজশাহী কেন্দ্রিক কিছু কিশোর ও যুবক ইমো দীর্ঘদিন ধরে হ্যাকিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এটি তাদের কাছে একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রবাসী পুরুষদের ইমোতে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। এমন পাঁচ জনকে গ্রেফতারের পর আমরা তাদের বিশাল একটা নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছি। এমন প্রতারণার কাজে এই চক্রের দেড় শতাধিক সদস্য জড়িত।তিনি আরো বলেন, প্রথমে তারা আইডি সার্চ দিয়ে প্রবাসীদের খুঁজে বের করেন। এরপর নারী সেজে নানা গল্প-কথায় উদ্দেশ্য অনুযায়ী এগোতে থাকেন। একপর্যায়ে অনৈতিক কাজ করার প্রস্তাব দেন। এ সময় ভিকটিম রাজি হলে জানান, ঘণ্টায় কাজ করতে হলে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হবে। তারপর টাকায় রাজি হলে মোবাইলের রেয়ার ক্যামেরায় অন্য কোনো কিশোরী বা নারীর ভিডিও চালু করে দিয়ে আড়ালে নারীকণ্ঠে প্রতারকরা কথা বলতে থাকেন। আর এতে ভুক্তভোগী প্রবাসীর কাছে আসল নারী মনে হতে থাকে। এভাবেই একসময় আরো ক্লোজ হতে হতে প্রবাসীর ইমো আইডি হ্যাক করতে ওটিপি কোড হাতিয়ে নেয়। এই প্রতারকরা প্রথমতো পুরুষ হয়েও নারী সেজে কথা বলে টাকা বাগিয়ে নিচ্ছে। দ্বিতীয়ত , তারা ইমো হ্যাক করে ইমো মালিকের কোনো অনৈতিক ছবি বা ভিডিও পেলে সেটি দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যম লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলছেন, নাটোরের লালপুর এলাকায় এ ধরনের প্রতারকদের আধিপত্য বেশি। আরো এক থেকে দেড় শতাধিক সদস্য তাদের সঙ্গে কাজ করছে। তারা সবাই একটি নেটওয়ার্কে কাজ করলেও চার-পাঁচ জনের গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতারণা করে। কেন প্রবাসীরা তাদের টার্গেট- এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীরা দীর্ঘদিন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেন। এ সময় তারা মাঝেমধ্যে বিনোদনের জন্য ইমোতে যান। আর সেখানেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন তারা।অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারদের তেমন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। কিন্তু তারা সবাই একসঙ্গে কাজ করার কারণে একে অপর থেকে এসব প্রতারণার কৌশল সহজে রপ্ত করে। আমরা এই চক্রের বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।