ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১ : রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা কোনো আকস্মিক কিংবা ছোটখাটো দ্বন্দ্ব থেকে নয়, এটা দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ, এছাড়া রয়েছে রোহিঙ্গা রাজনীতির নানা সমীকরণ। যার পেছনে আছে দেশি-বিদেশী শক্তিশালী চক্র। এমনই মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের লোকজনকে খুঁজে বের করা না গেলে, সার্বিক সংকটে বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে পরিবার নিয়ে থাকতেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস-এর প্রধান মুহিবুল্লাহ। তার পাশেই সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়। ২৯ সেপ্টেম্বর ৭ থেকে ৮ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত সেখানে ঢুকে মাত্র মিনিট খানেকের মধ্যেই তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, মুহিবুল্লাহকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সার্বক্ষণিক তার সাথে থাকতো ২০ থেকে ২৫ রোহিঙ্গা। এমন পাহারার মধ্যে দুর্বৃত্তরা কি করে তাকে হত্যার পর নির্বিঘ্নে পালিয়ে গেলো।
ঘটনার জন্য আরসাকে দায়ী করছেন তার স্বজনরা। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, মুহিবুল্লাহ হত্যা অনেক সুপরিকল্পিত। যার পেছনে আছে রোহিঙ্গা রাজনীতি বিষয়ক নানা সমীকরণ। সম্পৃক্ত আছে অনেক শক্তিশালী চক্র।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, এখানে স্বার্থসংশ্লিষ্ট যারা আছে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসন নিয়ে, একটা জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটানোকে দমন করানোর জন্য একটি অন্তর্ঘাতমূলক পরিকল্পনা থেকেই এই হত্যাকাণ্ড।
মানবাধিকার কর্মী নুর খান বলেন, রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ড নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটা ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে অনেক শক্তির সংশ্লিষ্টতার সম্ভাবনা রয়েছে। যারা হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত করেছেন তারা একটি বড় পরিকল্পনার অংশ বাস্তবায়ন করেছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, সবকিছুই সামনে রেখে এ ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। এজন্য কাজ করছে একাধিক টিম।
১৪ এপিবিএন অধিনায়ক নাইম উল হক বলেন, যেহেতু মুহিবুল্লাহর লোকজনের সামনে এ ঘটনাটি ঘটেছে, এটা অন্ত কোন্দলও হতে পারে।তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করেই এ বিষয়ে বলতে পারবেন।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো.হাসানুজ্জামান, মুহিবুল্লাহকে হত্যার নেপথ্য কি কারণ রয়েছে তা খুঁজে বের করা হচ্ছে।
তবে মুহিবুল্লাহ হত্যার কারণ এবং জড়িতদের পরিচয় স্পষ্ট করা না গেলে, ভবিষ্যতের জন্য এটা বড় অশনি সংকেত হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।