ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বুড়িচং প্রতিনিধি,বুধবার, ০৬ অক্টোবর ২০২১ : কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাম্মৎ সাবিনা ইয়াছমিনকে ‘আপা’ বলে সম্বোধন করায় সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর ওপর ক্ষেপেছেন। রাগান্বিত হয়ে ইউএনও ব্যবসায়ীকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করতে বলেছেন।
বুড়িচং উপজেলার ভরাসার বাজারের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন (৪৫)। ব্যবসায়ী পরে সেই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন। এ নিয়ে ফেসবুকে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে।
তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের সাধারণ জনগণকে স্যার বলতে হবে-এটা কি বাধ্যতামূলক? এই বিষয়ে সরকারের কোনো আইন আছে কি? ফেক্ট: বুড়িচং উপজেলার ইউএনও (মহিলা) কে আপা বলার কারণে খুব রাগান্বিত হয়েছেন। এটা নাকি অফিস অ্যাড্রেস না, ‘আপা’ না বলে ‘মা’ ডাকতাম। আমি লজ্জিত। দেশটা কি মগের মুল্লুক?’
ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, সোমবার দুপুরে জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত একটি কাজে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে যাই। এ সময় আমার সমস্যা তুলে ধরে সমাধান চাওয়ার সময় ইউএনওকে ‘আপা’ বলে সম্বোধন করি। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। তখন তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘স্যার’ ডাকতে না পারলে ‘মা’ ডাকবেন। এ ঘটনায় আমি বিব্রত হই। এ সময় কয়েকজন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকালে তিনি নানা কারণে ফেসবুক থেকে পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাম্মৎ সাবিনা ইয়াছমিন বলেন, ‘একজন বয়স্ক লোক এসে আমাকে ‘আপা’ ডেকেছে। আমি তাকে বলেছি, আপনি আমার বাবার বয়সী, ‘মা’ ডাকেন’। বয়স্ক লোকে ‘মা’ ডাকবে এটা স্বাভাবিক। বাবার বয়সের মানুষ যখন ‘‘আপা, ‘আপা’ ডাকে তখন খারাপ লাগে। যার এক পা কবরে চলে গেছে, সে আমাকে ‘আপা’ ডাকলে অবশ্যই আমার আপত্তি আছে। যার চরিত্রগত সমস্যা আছে, সে মেয়ে দেখলেই ‘আপা’ ডাকে। এটা বুঝতে হবে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি রিপোর্টারদের ফোন ধরতে বাধ্য নই। রিপোর্টারদের ফোন ধরার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা আছে এমন বিষয় কি কোথায় লেখা আছে?
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একজন সেবাপ্রত্যাশী যেভাবেই ডাকুক না কেন, এতে ওই কর্মকর্তার আপত্তি থাকার কথা না। সরকারি চাকরিতে এ ধরণের বিধি কোথাও উল্লেখ নেই। যেহেতু সেবাগ্রহীতা বয়স্ক মানুষ। এক্ষেত্রে তিনি রেগে না গিয়ে আরও বিনয়ী হতে পারতেন। বিষয়টি এককথায় অশোভন আচরণ। এ ধরণের আচরণ ওই কর্মকর্তা করতে পারেন না। এটা সম্পূর্ণ গর্হিত কাজ।