ইভ্যালির পৃষ্ঠপোষকতায় র‍্যাবের সিনেমার অগ্রগতি কতদূর?

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ : দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এদিকে ইভ্যালির পৃষ্ঠপোষকতায় র‍্যাব ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রযোজনায় ‘অপারেশন সুন্দরবন’ নামের একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।

যদিও ছবিটির কিছু অংশের কাজ বাকি আছে। দেশি-বিদেশি কলাকুশলী এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ভিএফএক্সের ছোঁয়ায় এই বিগ বাজেটের সিনেমাটি পরিচালনা করছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার পরিচালক দীপংকর দীপন। ইভ্যালির কর্ণধার রাসেলের গ্রেপ্তারের পর সিনেমাটির অগ্রগতির বিষয়টি আলোচনায় আসে। চলচ্চিত্রটির সবশেষ অবস্থা এবং ইভ্যালির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সময়নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন পরিচালক দীপংকর দীপন।


চলতি বছরের জানুয়ারিতে র‍্যাব সদর দপ্তরে ইভ্যালির পক্ষ থেকে পৃষ্ঠপোষকতার (স্পন্সর) চেক তুলে দেওয়া হয়। ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন র‍্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে চেকটি হস্তান্তর করেন। এদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেলসহ ইভ্যালি এবং র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নতুন করে আবারও আলোচনায় আসে।

সে সময় ‘অপারেশন সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রটি নিয়ে র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুন্দরবনকে জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত করতে ‘লিড এজেন্সি’ হিসেবে কাজ করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‍্যাব। সুন্দরবনে র‍্যাবের এই সাফল্য-গাঁথা ও রোমাঞ্চকর অভিযান চিত্র জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরতেই নির্মাণ করা হয় সিনেমাটি।

এরই মধ্যে দেশের আলোচিত ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। র‍্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। এমতাবস্থায় ইভ্যালির আংশিক পৃষ্ঠপোষকতায় (স্পন্সর) র‍্যাবের প্রযোজনায় নির্মিতব্য চলচ্চিত্র ‘অপারেশন সুন্দরবন’ এর ভাগ্যে কী ঘটছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে পরিচালক দীপংকর দীপন সময়নিউজকে জানান, প্রথমত সিনেমাটিতে শুধু ইভ্যালি পৃষ্ঠপোষকতা (স্পন্সর) করেনি। ইভ্যালি ছাড়াও পেট্রোম্যাক্স, চাল-ডাল, বিকাশ, এসিআই যুক্ত আছে। এমন বিগ বাজেটের সিনেমা করতে অনেকের পৃষ্ঠপোষকতার দরকার হয়ে থাকে। আর টিজারের ভিডিওর শেষে লক্ষ্য করলে দেখবেন ইভ্যালির নাম নিচের সারিতে স্যাভলনের সঙ্গে রয়েছে।

ইভ্যালির সংযুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণই প্রযোজকের বিষয়। ছবির মালিকানায় যদি পরিচালকের অংশ না থাকে তাহলে সে ছবিতে পরিচালক আরেকজন সাধারণ কর্মীর মতোই। যেমন আমারও একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে, তবে এই ছবিটি সেখানকার নয়। এটার প্রযোজক র‍্যাব ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি।

তিনি বলেন, আপনি লক্ষ্য করবেন, টিজারে প্রথমে আছে পেট্রোম্যাক্সের নাম। তার নিচে রয়েছে অ্যাসোসিয়েট প্রডিউসার ফরচুন গ্রুপের নাম। প্রথম দুই লাইনে ইভ্যালির নাম নেই। ইভ্যালির নাম নিচের সারিতে আছে। সিনেমাটি কাদেরকে কতটুকু ক্রেডিট দিল, সেখান থেকে বুঝে নিতে হয়, ‘কারা ছিল, কারা ছিল না।’

ছবিটির একটি মহৎ উদ্দেশ্যও আছে উল্লেখ করে দীপন আরও বলেন, ছবিটির লভ্যাংশ থেকে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যুদের এবং যারা ভিকটিম হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনে সাহায্য করা হবে।

দীপন সময়নিউজকে আরও জানান, যেহেতু এটা বানাচ্ছে একটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তারা একচুলও আইনের বাইরে যাবে না। কোনটা বৈধ কোনটা আইনসম্মত সেটা অনুযায়ীই তারা সিদ্ধান্ত নেবে।

সিনেমাটির সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, এডিটিংয়ের কাজ শেষ, চেন্নাই ও কলকাতায় এর ভিএফএক্সের কাজ চলছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে সিনেমাটি মুক্তি পেতে পারে বলে জানান পরিচালক।

‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমাটি রিয়াজ, সিয়াম, নুসরাত ফারিয়া, তাসকিনসহ একঝাঁক তারকা এতে অভিনয় করেছেন।

প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলশান থানায় প্রতিষ্ঠানটির সিইও ও চেয়ারম্যানকে আসামি করে প্রতারণার মামলা করেন এক গ্রাহক। অভিযোগ ছিল, গ্রাহক ও বিভিন্ন মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানের ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইভ্যালি।


২০১৬ সালে প্রথমে অনলাইনে ডায়াপার বিক্রি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন রাসেল। ২০১৭ সালে এই ব্যবসা করতে গিয়ে বড় একটি অনলাইন প্লাটফর্মের কথা চিন্তা করেন তিনি। সেই চিন্তা থেকেই প্রতিষ্ঠা করেন দেশীয় ই-কমার্স কোম্পানি ‘ইভ্যালি’। প্রায় ১৭ লাখ নিয়মিত ক্রেতা, ২০ হাজারের বেশি বিক্রেতা নিয়ে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে স্বল্প সময়ে প্রথম সারিতে উঠে আসে ‘ইভ্যালি’।