ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ : দীর্ঘ ১৬ বছরেও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ইজারা না হওয়ায় কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
সায়েদবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা উঠানো হলেও রাজস্ব খাতে জমা পড়ত মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর বাকি টাকার পুরোটা দক্ষিণ সিটির পরিবহন বিভাগ ও তাদের সিন্ডিকেটের পকেটে।
তবু বিষয়টি খুব একটা গায়েই মাখছে না ডিএসসিসি। তারা বলছে, তদন্ত করে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
২০০৫ সালের পর সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ইজারা দিতে পারেনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। নগরভবন বিভিন্ন সময় দরপত্র আহ্বান করলেও কাঙ্ক্ষিত ইজারাদার না পাওয়ায় দীর্ঘ ১৬ বছরেও ইজারা হয়নি টার্মিনালের।
অভিযোগ আছে, পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের কারসাজিতে দরপত্রে উচ্চমূল্য নির্ধারণ করায় কেউ দরপত্র কিনতেন না। আর সুযোগ কাজে লাগিয়ে বছরের পর বছর নিজেদের সিন্ডিকেট দিয়ে টাকা উঠিয়ে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল চালাচ্ছিলেন পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক। সেখান থেকে নাম মাত্র টাকা জমা দিতেন রাজস্ব খাতে।
যারা টার্মিনাল ফি উঠাতেন তাদের একজন বলছেন, টার্মিনাল থেকে তারা গড়ে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা জমা দিতেন মহাব্যবস্থাপক বিপুল চন্দ্রের কাছে।
একজন বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ টাকা জমা দিতেন। এর মধ্যে কোনো দিন ৫ হাজার কম তো কোনো ৫ হাজার বেশি। গড়ে ২ লাখের মতো টাকা দিত। তার মনোনীত লোক ছাড়া এই টাকা কেউ উঠাতে পারত না। তারা ২০-৫০ লাখ টাকা দিয়েই এই দায়িত্বে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন, প্রায় ২ লাখের ওপরে রাজস্ব জমা দিত। আবার কখনো এক লাখ ৯৮ হাজার, এক লাখ ৯০ হাজার আবার কখনো ২ লাখ ১০ এমন।
আর বিপুল চন্দ্রের সিন্ডিকেটের মধ্যে ছিলেন, শওকত হোসেন। পুরো টার্মিনাল ১২ বছর নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। এ ছাড়া আলমগীরের নিয়ন্ত্রণে ছিল কুলিমজুরি ও টার্মিনালের পাঁচটি গণশৌচাগার নিয়ন্ত্রণ করতেন বাচ্চু।
এসব অভিযোগের বিষয়ে পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বিপুল চন্দ্রের বক্তব্য জানতে গেলে তড়িঘড়ি করে অফিস ত্যাগ করেন তিনি।
এত কিছুর পরেও টনক নড়েনি সিটি করপোরেশনের। সেই গতানুগতিক আশ্বাস কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদ বলেন, আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে আমরা যদি কোনো অভিযোগ পাই অবশ্যই আমরা এটি খতিয়ে দেখব এবং আমরা প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কিন্তু আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি।
সম্প্রতি সেভেন ইলেভেন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে দৈনিক এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা আদায়ের শর্তে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ইজারা দিলেও এখনো ইজারার বাইরে রয়েছে দুটি বাস ও দুটি ট্রাক টার্মিনাল।