মরিশাস থেকে ফেরা এক তরুণীর মর্মান্তিক কাহিনী

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,সোমবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ : মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপের পর মানবপাচারকারীদের নতুন গন্তব্য মরিশাস। ভালো বেতনের চাকরি দেওয়ার কথা বলে পাচার করা হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। মূল টার্গেট কিশোরী, তরুণী।

ধর্ষণ, জোরপূর্বক গর্ভপাতের পাশাপাশি ভিকটিমের স্বজনদের করা হচ্ছে নির্যাতন। পাচারকারীদের খপ্পর থেকে প্রাণে বেঁচে ফেরা বাংলাদেশি এক তরুণী ও তার বাবার মর্মান্তিক কথা তুলে ধরা হলো।

সংসারের দারিদ্র্যতা ঘুচিয়ে অটোরিকশা চালক বাবা আর বোনকে নিয়ে একটু ভালোভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলেন আসমা আক্তার নামে এক তরুণী। গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি পূর্ব আফ্রিকার দেশ মরিশাসে শ্রমিক হিসেবে পাঠানোর সময় রিক্রুটিং এজেন্সি জানিয়েছিল টেক্সটাইল কোম্পানিতে সহকারী হিসেবে কাজ করবেন আসমা।

কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই নিয়োগ কর্তাদের আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। ধর্ষণ, নির্মম নির্যাতনের পর করা হয় জোরপূর্বক গর্ভপাত।


ভুক্তভোগী ওই তরুণী জানান, আমি ওখানে মৃত্যু দেখে এসেছি। ওরা একটা দল করেছে, ফোরকান-সিদ্দিক, আসলাম, শাহ আলম এরা বসের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। ওখানে অনেক মেয়ে আছে তারা নির্যাতিত হচ্ছে।    

এখানেই ঘটনার শেষ নয় ১১ মাস পর আসমার বাবাকে শর্ত দিয়ে দেশ থেকে মরিশাসে নিয়ে যাওয়া হয়। বিনিময়ে মেয়েকে পাঠান হয় দেশে। সংবাদমাধ্যমে আসমা নিজের নির্যাতনের কথা জানালে মরিশাসে তার বাবার ওপর শুরু হয় নির্যাতন। সেখানকার থানায় দায়ের করা হয় চুরির মিথ্যা অভিযোগও।


ভুক্তভোগীর বাবা জানান, আমাকে বলে আপনার মেয়ে যদি মামলা বা সাংবাদিকদের এসব কথা জানানো বন্ধ না করে তাহলে আপনাকে মেরে ফেলতে পারে। মেরে সাগরে ফেলে দিতে পারে এমন হুমকিও দেয় তারা। এ ঘটনায় আমি সবার কাছে বিচার চাই।  
এ ঘটনায় মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে অভিযোগের ভিত্তিতে দেশটির পররাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্তে মামলা করেছে। আর রামপুরা থানায় ভুক্তভোগীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক।
রামপুরা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মানবপাচার রোধে আমরা যথেষ্ট সচেতন রয়েছি। মরিশাসে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির করা মামলায় ৮ জনের মধ্যে অন্যতম আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যান্য পলাতক আসামি যারা বিদেশে রয়েছে তাদের গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।  

পূর্ব আফ্রিকার দেশ মরিশাসে বর্তমানে ২৫ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। যাদের মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি।