সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স আবারো বাড়াতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দাফতরিক ও বিধিগত বিষয় পর্যালোচনা করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত করেছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত সভায় এটি উপস্থাপন করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণ গণকর্মচারীদের অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টিও অলোচনায় আসতে পারে। তবে মন্ত্রিসভা যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে সেভাবেই মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে-এ নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা হবে না।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করা বিষয়ক একটি প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। প্রস্তাবটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। বিধান অনুযায়ী এটি কার্যকর করতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ও মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু দীর্ঘদিন এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণ না করায় সংক্ষুব্ধরা আদালতের শরণাপন্ন হন। প্রথমে হাইকোর্ট পরে আপিল বিভাগ একই নির্দেশনা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের আদেশ দেন। যদিও আদালত মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীদের আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা জারি করেননি। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভাকেই স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এখন মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীর অবসরের বয়স ৬২ বছর আর সাধারণ গণকর্মচারীর অবসরের বয়স ৬১ বছর করার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এর আগে গণকর্মচারীদের অবসরের বয়স প্রথমবার বাড়ানো হয় ২০০৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর। এসময় ১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইন সংশোধন করে মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীদের অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালের ৩ ফেরুয়ারি আলোচ্য আইন পুনরায় সংশোধন করে সকল ধরনের গণকর্মচারীর অবসরের বয়স ৫৯ বছর করা হয় আর মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীর অবসরের বয়স করা হয় ৬০ বছর।
প্রসঙ্গত, দেশে গণকর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীর সংখ্যা কমবেশি ৫ হাজার।