ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি,২৪ এপ্রিল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাইকিং করে লোকজনকে জড়ো করে পুলিশের উপর হামলা চালানোর দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ইসলামী ছাত্র খেলাফতের কেন্দ্রীয় সহকারী দাওয়া সম্পাদক আশরাফ আলী (২৮) ।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে তার জবানবন্দি নথিভূক্ত করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলাম।
আশরাফ সদর উপজেলার অষ্টগ্রামের ইছা মিয়ার ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ইসলামী ছাত্র খেলাফতেরও সহ-সভাপতি।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, গত ২৭ মার্চ শহর থেকে প্রায় সাত থেকে আট কিলোমিটার দূরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মী-সমর্থক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ। সংঘর্ষের আগে আশরাফ মিছিল নিয়ে নন্দনপুর বাজারে আসেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে আশরাফ মাইক নিয়ে বের হন। মাইকিং করে লোকজন জড়ো করেন আশরাফ। ২৬ মার্চ ঢাকার বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রামের হাটহাজারির ঘটনার প্রতিবাদে আশরাফ মিছিল নিয়ে যায় এবং মাইকিং করে লোকজনকে জড়ো করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন আশরাফ।
তিনি বলেন, ওই দিন নন্দনপুরে সংঘর্ষের সময় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা সেখানে থাকা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়।
পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে আশরাফকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশের ওপর হামলার দায় স্বীকার করেন। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার বিকেলে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হাকিম রাকিবুল ইসলাম তার ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নথিভূক্ত করেন। জবানবন্দিতে পুরো হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন আশরাফ। এখন পর্যন্ত এ মামলায় মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আশরাফকে র্যাব -১৪ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর, ঢাকার বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রামের হাটহাজারির ঘটনার প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার চালায় মাদ্রাসাছাত্র শিক্ষক এবং হেফাজতের নেতা ও কর্মী-সমর্থকরা। ঘটনায় মোট ৫৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাগুলোতে ৪১৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা অন্তত ৩৯ হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে।