যেভাবে গ্রেফতার হলেন মামুনুল হক

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,১৮ এপ্রিল : অবশেষে রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বেশ কিছুদিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বেশ কিছুদিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়ে সহিংসতা ও রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টে নারীসঙ্গীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর ছাড়া পেয়ে রাতেই ঢাকায় চলে আসেন তিনি। ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ের নিজ বাসায় না গিয়ে তিনি পাশেই জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় যান। সেখানেই অবস্থান করছিলেন।

মাদরাসায় নজর রাখছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কেননা এই মাদরাসার একটি কক্ষে বসেই ফেসবুকে লাইভ করছিলেন হেফাজতের এই নেতা। তবে সর্বশেষ লাইভে এসে দ্বিতীয় বিয়ের দাবির স্বপক্ষে স্ত্রীর কাছে সত্য গোপন করার অবকাশ রয়েছে এমন বক্তব্য দিয়ে নিজ দলের আলেম-ওলামাদের কাছে সমালোচনার শিকার হন তিনি। পরে চাপের মুখে সেই ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ডিলিটও করে দেন।

মাদরাসা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করতে পারে- এ কারণে পাশেই নিজের বাসা হলেও তিনি সেখানে যাচ্ছিলেন না। তক্কে তক্কে থাকা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মামুনুলের অবস্থান নিশ্চিতের পর রোববার তাকে ওই মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া থেকেই গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

দুপুর ১২টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর মামুনুলকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ।

হারুন অর রশীদ জানান, হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের পর তাকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। আপাতত মোহাম্মদপুর থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্য মামলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিমের যৌথ অভিযানে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ৩ এপ্রিল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা। পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রিসোর্টে ভাঙচুর চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা।

ওই ঘটনায় বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে মামুনুল হককে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৬’শ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া স্থানীয় এক সংবাদকর্মীকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে, গত ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় ওই মামলাটি করেন।

এ ছাড়া ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।