ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ষ্টাফ রিপোর্টার,০৪ এপ্রিল : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে থাকা নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে তার নাম আমিনা তৈয়বা বললেও ওই নারী বলেছেন ভিন্ন নাম। ওই নারী নিজের নাম বলেছেন জান্নাত আরা জান্নাত। তার সঙ্গে এক নারীর কথোপকথনের একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ হয়। সেখানে নিজেকে জান্নাত আরা জান্নাত বলে পরিচয় দেন তিনি।
মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে একের পর এক প্রশ্ন করার বিষয়টি ফেসবুকে লাইভ হয়। এ সময় তিনি বারবার বলতে থাকেন, ওই নারী আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। শরিয়ত মেনে তাকে বিয়ে করেছি। এর প্রমাণ আছে। আমি কি আমার স্ত্রীকে নিয়ে এখানে বিশ্রামের জন্য আসতে পারি না?
এরই মধ্যে ফেসবুকে প্রকাশ হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারী জানান তার নাম জান্নাত আরা। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায়। তিনি মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী।
আপনার নাম যেন কী বললেন?
জান্নাত আরা (অস্পষ্ট)।
আপনার বাবার নাম?
অলিয়র রহমান।
বাড়ি কোথায়?
ফরিদপুর।
ভাঙা থানায়?
-জ্বি।
না, আলফাডাঙ্গা থানায়।
তখন যে বললেন ভাঙা থানায়?
ভুল বলেছিলাম।
আপনি মামুনুল হক সাহেবের সেকেন্ড ওয়াইফ, না?
জ্বি।
আপনাদের কোনো বেবি নেই?
না।
ওনার প্রথম ঘরের স্ত্রীর কয় সন্তান?
চার ছেলে।
মেয়ে নেই?
না।
এখানে কখন আসছেন?
লাঞ্চ আওয়ারের পরে।
এর আগে কোথায় ছিলেন?
বাসায়।
বাসা কোথায়? কোন বাসায়? ঢাকায়?
জ্বি।
ঢাকা বাসা কোথায়?
মোহাম্মদপুর।
মোহাম্মদপুর কোথায়?
মোহাম্মদপুরের এখানেই বাসা।
এখানে কি বেড়াতে আসছিলেন নাকি থাকতে আসছিলেন?
বেড়াতে আসছিলাম।
কোথায়, মিউজিয়ামে?
এখানেই আসছিলাম। রেস্ট করতে।
বাসায় রেস্ট করার জায়গা নেই?
অবশ্যই আছে। বাসায় কি সবাই সব সময় রেস্ট করে? বাইরে কেন আসে। দেশের বাইরেও তো যায়। যায় না।
হ্যাঁ, যায়, সেটা তো প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখার জন্য, ঘোরার জন্য।
এখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ আমরা দেখতে দেখতে একটু লাঞ্চ করে একটু রেস্ট করে চলে যাব।
হঠাৎ করে এখানে শোরগোল কেন হলো, সবাই কী করে জানতে পারল বা জানল?
আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
আপনি বাথরুমেই কী কারণে এলেন? আপনার তো হাসব্যান্ড।
অ্যাকচুয়ালি আমার হাসব্যান্ড ঠিক আছে। কিন্তু আমার হাসব্যান্ড তো আর দশটা হাসব্যান্ডের মতো না। আমি সবার সামনে যেতে পারি না তাই।
মামুনুল হক বললেন…
প্রশ্ন: আপনার কী হয়?
মামুনুল: আমার ওয়াইফ। আমি তাকে বিয়ে করেছি। শরিয়তসম্মতভাবে বিয়ে করেছি।
প্রশ্ন: কবে বিয়ে করছেন? বিয়ে করলে রয়াল রিসোর্টে কেন আসবেন সময় কাটাতে?
মামুনুল: বিয়ে করেছি, প্রমাণ আছে, সাক্ষী আছে।
প্রশ্ন: কয় বছর আগে বিয়ে করেছেন?
মামুনুল: দুই বছর আগে।
প্রশ্ন: দুই বছর আগে বিয়ে করলে সময় কাটাতে রিসোর্টে কেন আসছেন?
মামুনুল: আমি বেড়াইতে আসছি।
প্রশ্ন: আপনার ওয়াইফের নাম কী?
মামুনুল: আমিনা তৈয়বা।
প্রশ্ন: তার বাড়ি কই?
মামুনুল: কিছুই বলব না।
এর আগে বিকেলে সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা। পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল হক।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, মামুনুল হক সকালে রয়াল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষটিতে ওঠেন। দুপুর থেকেই এলাকায় চাউর হয় মামুনুল হক এক নারীসহ রিসোর্টে অবস্থান করছেন। এ খবরে এলাকার লোকজন রিসোর্টটি ঘেরাও করে। সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তবিদ রহমান সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা মামুনুল হকের সঙ্গে কথা বলেছি। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
মামুনুল হকের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এ দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতের নেতাদের বিষয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নানামুখী এ ষড়যন্ত্রের মধ্যে আজকের এ ঘটনাটিও ষড়যন্ত্র কিনা, আমরা দলীয়ভাবে তা খতিয়ে দেখব।’