কঙ্কাল থেকে হত্যারহস্য উদঘাটন

SHARE

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর টাকা ফেরত চাওয়ায় হত্যা করা হয় কুলসুম বেগমকে। ছবি : ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি,২১ ফেব্রুয়ারি : মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার হাষাড়গাঁও গ্রামের জমি থেকে এক নারীর কঙ্কাল উদ্ধারের পর হত্যারহস্য উদযাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় বিদেশফেরত প্রতিবেশী যুবক সুমন হোসেন ওরফে সুমন শেখকে (৩১) গ্রেপ্তারের পর হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের উপকণ্ঠ নতুনগাঁও এলাকার জেলা পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক।

গ্রেপ্তার হওয়া সুমন শেখ আদালতে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর টাকা ফেরত চাওয়ায় কুলসুম বেগম (৩৫) নামের ওই নারীকে ধারালো দা দ্বারা কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

নিহত কুলসুম বেগম উপজেলার হাষাড়গাঁও গ্রামের ইকবাল শেখের স্ত্রী।

প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে হাষাড়গাঁও পতিত জমি থেকে এক নারীর কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জামা-কাপড়, স্যান্ডেল ও পায়ের আঙ্গুল দেখে ছেলে কামরুল হাসান অয়ন কঙ্কালটি তাঁর মা কুলসুম বেগমের বলে শনাক্ত করেন। তিনি গত ১৭ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কংকাল উদ্ধারের দুদিন পর ছেলে অয়ন বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক আরও জানান, শ্রীনগর থানার লোমহর্ষক ওই মামলার সংবাদ পাওয়ার পর জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিশ্বস্ত গুপ্তচর ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকারীকে শনাক্ত করে। এরপর পিবিআই নিজ উদ্যোগে ওই মামলা গ্রহণ করে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জেলার সিরাজদীখান উপজেলার রামকৃষ্ণদি বাজার থেকে বিদেশফেরত সুমন শেখকে আটক করে। পরে পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে কুলসুম বেগমকে হত্যা করার নানা তথ্য দেন সুমন।

নিহত কুলসুম বেগমের প্রতিবেশী সুমন জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে জানিয়েছেন, কাতারে থাকাকালীন মোবাইল ফোনে কুলসুম বেগমের সঙ্গে তার পরিচয়। পরবর্তীতে দেশে ফিরলে কুলসুম বেগমের ছেলে অয়নকে বিদেশে পাঠানোর নাম করে ছয় লাখ টাকা নেন তিনি। বিদেশে পাঠাতে না পারলে কুলসুম বেগম টাকা ফেরত চান। এরই জের ধরে গত ১৭ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যান। এরপর সেখানে ধারালো দা দিয়ে কুলসুম বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে কচুরিপানার ভেতর লাশ লুকিয়ে রাখে।

পিবিআই পুলিশ সুপার আরও জানান, সুমনকে মুন্সীগঞ্জ আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুমন শেখ। তাছাড়া তাকে গ্রেপ্তারের পর ঘটনাস্থলের পাশের একটি পুকুর থেকে কুলসুম বেগমের ব্যবহৃত ভ্যানিটি ব্যাগ ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা জব্দ করে পিবিআইয়ের টিম।