ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,০৬ ফেব্রুয়ারি : নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে অশ্লীল জগতে পা বাড়ানো নেহার টার্গেট ছিলো ধনী পরিবারের তরুণ-তরুণীরা। বিশেষ করে নামি দামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিকেই ছিলো তার বিশেষ আকর্ষণ। টার্গেটকৃতদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরিতে তার হয়ে একাধিক উশৃঙ্খল তরুণ-তরুণী মাঠ পর্যায়ে কাজ করতো। যাদেরকেও বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা দিতো ডিজে নেহা। শিশা পার্টি, মদ পার্টি এবং অশ্লীল নাচের আয়োজনে দাওয়াত পেত সমাজের উচ্চ বিত্তের সন্তানরা। যারা নেহার হাত ধরেই বেলাল্লাপনায় জড়িয়ে পড়ে।
ডিজে নেহা, তার সঙ্গে বন্ধুত্ব আর পরিচয়ই কাল হলো ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস অব বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থী মাধুরির।
নেহার সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরেই যাতায়াত শুরু হয় বিভিন্ন হোটেল বারে। এসব থেকে মদ্যপান, সবশেষ মৃত্যু। পুলিশ বলছে, ডিজে নেহা তার পার্টিতে উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যদের ডেকে নিয়ে কৌশলে টাকা কামাই করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর নেহাকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর এমনসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
চকচকে হোটেলের বার কিংবা দামি শিশা লাউঞ্জে দেখা মিলতো ডিজে নেহার। ঠোঁটে কখনো শিশার পাইপ আবার কখনো হাতে দামি বিদেশী মদের বোতল।সেইসাথে গানের তালে তালে চলতো উদ্দাম নাচ।
নেহা পরতেন দামি দামি ড্রেস। ব্যবহার করতেন দামি ব্রান্ডের মেকআপ। আর এমন রুপের ঝলক দেখিয়ে আয়োজন করতেন ডিজে পার্টির। সেসব পার্টিতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসা হতো ধনী পরিবারের সন্তানদের। সেখান থেকে অনৈতিক কার্যকলাপ। এটাই ছিলো নেহার আয়ের উৎস।
ডিএমপি উপ পুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) হারুন অর রশীদ বলেন, সে (নেহা) প্রতিরাতেই এরকম পার্টির আয়োজন করত। সারারাত ঘুরে বেড়ায় এমন ছেলেদেরকে সে কালেকশন করতো। মদ সাপ্লাইয়ের জন্য একজন ক্যারিয়ার থাকতো যে এসে মদ দিয়ে যেত এবং এই মদ খেয়েই তারা নাচানাচি করত।নেহার মতো মেয়েদের কাজই হলো বড় বড় ডিজে পার্টিগুলোতে গিয়ে বড়লোকের ছেলেমেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি করা।
শুক্রবার নেহাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তারা বলছে, পরিবার ও স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর এমন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন নেহা।
ডিএমপি উপ পুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) হারুন অর রশীদ বলেন, “ছেলে-মেয়েরা সারারাত বাইরে থাকছেন, কারো কথা শুনছেন না, ড্রিংক করে বাড়ি ফিরছেন, এটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে এরকম ঘটনা আরো ঘটতে পারে।”
রাজধানীতে যারা এধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে পুলিশ। আর অনুমোদনহীন রেস্টুরেন্টে কোন ধরনের মাদকের আসর না জমাতে বলছেও বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে বিষাক্ত মদ কোথা থেকে এসেছে আর নেহার সাথে আর কে কে জড়িত সেসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।