ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,২৯ জানুয়ারি : মানব পাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতে বাংলাদেশের এমপি পাপুলের জেল-জরিমানার ঘটনা এখন আলোচনার তুঙ্গে। প্রশ্ন ওঠেছে, এমপি পদে থাকার বৈধতা নিয়েও। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, রায়ের কপি পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতন কোনো সংসদ সদস্য বিশেদের মাটিতে ফৌজদারি অপরাধে শাস্তি পেলেন।
তিন দশক কুয়েতে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করলেও অল্প দিনেই বন যান ব্যবসায়ী। ধীরে ধীরে জড়িয়ে পরেন রাজনীতিতে। প্রথমে বিএনপির সাথে যুক্ত থাকলেও পরে নাম লেখানোর চেষ্টা করেন আওয়ামী লীগে। আওয়ামী লীগের টিকিট না পেয়ে এমপি হন স্বতন্ত্র থেকে। স্ত্রীকে দিয়েও বাগিয়ে নিয়েছেন, সংরক্ষিত নারী সংসদের একটি আসন।
মানব ও অর্থপাচারের দায়ে দেশটির ফৌজদারি আদালত কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে দিয়েছেন ৪ বছরের কারাদণ্ড। পাশাপাশি করেছেন ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা। পাপুল ছাড়াও ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মাজেন আল জারাহকেও একই সাজা দিয়েছেন আদালত।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ র ২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নৈতিক স্খলনে কমপক্ষে দু বছরের কারাদণ্ড হলে কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্যের যোগ্যতা হারাবেন। সেক্ষেত্রে কুয়েতের আদালতে ৪ বছরের সাজা কি পাপুলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে? সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলছেন, এটার জন্য প্রয়োজন সাংবিধানিক ব্যাখার।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পাপুলের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কিনা। জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, কুয়েতের আদালতে দেওয়া রায়ের কপি আনার চেষ্টা চলছে। রায়ের কপি পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অর্থ ও মানবপাচারের দায়ে, কুয়েতে এমপি পাপুলের সাজার ঘটনা বাংলাদেশ সরকারের দুর্নীতিকে আন্তর্জাতিক মান দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদকে ছোট করেছেন পাপুলের কর্মকাণ্ড।
বর্তমানে এমপি পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে পাপুলসহ পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে পাপুল পরিবারের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব। দেয়া হয়েছে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও।