আইএস হামলার আতঙ্কে ভারতজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সব কটি রাজ্যকে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, লোন উল্ফ মডেল অর্থাৎ জনবহুল এলাকায় একা হামলা চালাতে পারে আইএস ভাবধারায় বিশ্বাসী যুবকরা। এ কারণে বিশেষভাবে সংখ্যালঘু যুবসমাজ আইএস ভাবধারায় প্রভাবিত হচ্ছে কিনা তাও নজরে রাখতে বলা হয়েছে। আইসিস কোনো নির্দিষ্ট দেশ নয়, সারা পৃথিবীর কাছেই আশঙ্কার। ভারতেও আক্রমণ করতে পারে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। মন্তব্য করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং। খবর দ্য হিন্দু।
এদিকে ভারতে মোট ১২টি রাজ্যে আইএসের প্রভাব রয়েছে। তারমধ্যে মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোতেই আইএসের প্রভাব সব থেকে বেশি। তবে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গ বা আসাম। তাছাড়া সম্প্রতি আরেকটি তথ্য ভারতকে চিন্তায় ফেলেছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জেনেছে, গোটা পৃথিবীতে আমেরিকা ও এশিয়ার মধ্যে ভারতেই আইএস সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সব থেকে বেশিবার দেখা হয়েছে। এই আগ্রহ শেষ পর্যন্ত মুসলিম যুবকদের একাংশকে আইএসের কট্টর ভাবধারায় যে একেবারে অনুপ্রাণিত করবে না এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ভারত। কারণ সিরিয়া-তুরস্কের সাফল্যে এমনিতেই উজ্জীবিত আইএস। তারমধ্যে হয়েছে প্যারিসে হামলা। সমীক্ষা বলছে, গোটা বিশ্বে ক্রমশ বাড়ছে এই জঙ্গিগোষ্ঠীর জনসমর্থন। পিছিয়ে নেই ভারতও।
অন্যদিকে কাশ্মীরে কিছু বিক্ষিপ্ত অংশে আইএসের পতাকার উপস্থিতি ছাড়া এখন পর্যন্ত ভারতের মাটিতে সেই অর্থে ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর সক্রিয় কোনো উপস্থিতি নেই। তবে বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আশংকার বিষয় প্রধানত দুটি। প্রথমত. আইএসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মীয় সাম্রাজ্য গঠনের লড়াইতে অংশ নিতে ভারত ছেড়েছেন প্রায় দুই ডজন যুবক। তাদের অর্ধেক ইতিমধ্যে সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। বহু যুবক যে ওই লড়াইতে অংশ নিতে সিরিয়া-তুরস্কে যেতে চান এমন প্রমাণও এসেছে তাদের কাছে। চলতি বছরে ১৭ জন যুবক কেবল তেলেঙ্গানা থেকে ও ৪ জন মহারাষ্ট্র থেকে তুরস্ক যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। যাদের শেষ মুহূর্তে আটকানো হয়। দ্বিতীয়ত. সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে না পারলেও, আইএসের ভাবধারা মুসলিম যুবসমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে তৎপর রয়েছে একাংশ। এদের অধিকাংশ শিক্ষিত, ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ। শিক্ষিত সমাজের এই অংশ বেশি চিন্তায় রেখেছে মন্ত্রালয়কে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে, একা তাদের পক্ষে এ সমস্যা মোকাবেলা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বিশেষ করে ইন্টারনেটের ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে তাতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একা সবকিছু নজরদারি সম্ভব নয়। তাই আইএস প্রভাব রয়েছে এমন সব কটি রাজ্যকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে।