নিরাময়ের বদলে নির্যাতন চলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলোতে (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,২৮ নভেম্বর : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ শতাধিক মাদকসক্তি চিকিৎসাকেন্দ্র। রোগীদের নির্যাতন করাসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এসব চিকিৎসাকেন্দ্রে সুস্থ হওয়ার বদলে উল্টো মানসিক সমস্যায় ভোগেন রোগীরা।

ছদ্মনামের জসিম গাঁজা ও ইয়াবা আসক্ত। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এর আগে কয়েকবার মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা উল্টো শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী জসিম বলেন, ‘পিলারের সাথে হাত বেঁধে আমাকে মারছিল। টর্চার করেছে দেড় মাস পর্যন্ত।’

রনির অবস্থাও একই। কেরানীগঞ্জের ফিউচার নামে একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তির পর মারধরের শিকার হয়েছেন। পাননি নিয়মিত কাউন্সিলিং ও চিকিৎসা।

ভুক্তভোগী রনি বলেন, ‘শুধু শুধু মারধর করতো। আমাকে টানা ওষুধ দিয়েছে। ওষুধ খাইলে শুধু ঘুম আসতো আর হা করে থাকতাম।’

এরপর কেরাণীগঞ্জের ঘাটারচরে ফিউচার নামের ওই চিকিৎসা কেন্দ্রে যায় সময় সংবাদ। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন লাইসেন্স বিহীন চলছিল প্রতিষ্ঠানটি। ১০ দিন আগে হঠাৎই কার্যক্রম বন্ধ করে উধাও হয়ে যায়।

সূত্র বলছে, রাজধানীসহ সারাদেশে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা শতাধিক। যেখানে রোগীদের চিকিৎসার পরিবর্তে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়। আর অনুমোদিত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রের সংখ্যা ৩২৪টি হলেও এর বেশিরভাগই মানে না নিয়ম। ১০ জনের বিপরীতে একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও অনেক কেন্দ্রই তা মানছেনা। তবে বৈধ মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রের মালিকরা বলছেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের দায় নিতে হয় তাদেরও।

সেফ হোম মাদকাসক্তি পুর্নবাসন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান মানিক বলেন, ‘কিছু কিছু অবৈধ সেন্টার একই ট্রিটমেন্ট দিচ্ছে সবাইকে। এটার ফলে রোগী রিঅ্যাক্ট করছে সে সাথে রোগীর ভালো হওয়ার রেশিও কমে যাচ্ছে।’

তবে নিয়মের বাইরে কোনো মাদকাসক্ত চিকিৎসাকেন্দ্র চললে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, নামই হচ্ছে নিরাময়কেন্দ্র সেখানে কেন নির্যাতন করবে, এটা কখনই কেউ চাই না। এটা যারা করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং হবে।’

সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এমন চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে আসেন রোগীরা। তবে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে স্বাভাবিক জীবন তো দূরের কথা মাসের পর মাস থাকতে হয় এক অমানবিকতার মধ্যে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজনদারি আরো বাড়ানো গেলে এসব কেন্দ্রে যেমন নিরাময় হবে, তেমনি রোগীদের দ্রুত সারিয়ে তোলাও সম্ভব।