ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,২৪ সেপ্টেম্বর : চার বছরের ছোট্ট মিম তার বড়ভাইয়ের ঈর্ষার বলি হয়েছে। বাবা-মা বোনকে বেশি ভালোবাসতো। তাই ঈর্ষান্বিত হয়ে ছোটবোন মিমকে হত্যা করেছে আল-আমিন সজিব (১৪) নামের কিশোর ভাই।বুধবার রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তিতে ওই হত্যাকাণ্ডের পর র্যাব সজিবকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে ছোটবোনকে হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করে সে। বৃহস্পতিবার র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজিব হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কড়াইল বস্তির একটি বাসার গোসলখানা থেকে মিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে মিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গোসলখানা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় শিশু মিম আক্তারের বাবা লিটন বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।জানাগেছে, শিশু মিম আক্তারের বাবা লিটন আমড়া বিক্রি করেন। মা রুখসানা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিন বছরের বেশি সময় ধরে লিটন মিয়া ওই ঠিকানায় সপরিবারে বসবাস করছেন। তার বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায়। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে সজিব এবং ছোট মেয়ে মিম।র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে র্যাব ১০ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করে মিমেরই বড় ভাই সজিবকে। সজিব স্থানীয় আইডিয়াল স্কুলের ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে সজিব জানায়, ছোট বোন মিম জন্মের পর থেকে তার প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা কমতে থাকে। যত দিন যায় বাবা-মা তার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েন। সব ভালোবাসা মিমের দিকে চলে যায়। তার ওপর কারণে-অকারণে চলে বাবার নির্দয় প্রহার। যার দরুণ ছোট বোনের প্রতি তার ক্ষোভ জন্মাতে থাকে এবং সব কিছুর জন্য তাকে দায়ী মনে করে সজিব।সজীবের আরও অভিযোগ, প্রতিদিন বাসায় ফিরে বাবা মিমকে কাছে ডেকে নিতো এবং আদর করতো। বাইরে থেকে কিছু আনলে তাকে খেতে দিতো। বাবা-মা দুজনই তার ছোট বোনের সব আবদার পূরণ করলেও তার বেলায় বিপরীত ঘটতো। তাই সে ছোট বোন মিমকে বাবা-মায়ের চোখের আড়াল করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি আটতে থাকে। যাতে সে আগের মতো আদর, ভালোবাসা পেতে পারে। এর জন্য সে সুযোগের অপেক্ষা করতে থাকে। ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে পার্শ্ববর্তী মাদরাসা থেকে পড়া শেষে বাসায় ফেরার সময় সে তার বাবাকে ঘরের বাইরে যেতে দেখে এবং ঘরে ফিরে ছোটবোন মিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।ঘরে বাবা-মা কেউ না থাকায় মোক্ষম সুযোগ মনে করে সে ঘুমন্ত ছোট বোনকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে তার বাবা বাসায় ফিরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। বাসার বাইরেও খুঁজতে যান। এই সুযোগে সজিব মিমের লাশ পাশের গোসলখানায় রেখে আসে।