ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,১৬ আগষ্ট : চট্টগ্রামে শিল্প কারখানায় লোহা কাটাসহ ভারি কাজে ব্যবহৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনকে মেডিকেল অক্সিজেন হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। একদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, অন্যদিকে এর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
এ অবস্থায় এ কাজের সঙ্গে জড়িত চারটি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের শ্বাসকষ্ট নিবারণে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেনের। মূলত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বজায় রাখতে কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। আর এ অক্সিজেন হয় একেবারে মানবদেহের উপযোগী। এতে অন্য কোনো উপকরণের সংমিশ্রণ ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত বাড়তি দামের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে প্রমাণ পায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনকে মেডিকেল অক্সিজেনে রূপ দেয়ার অপচেষ্টার। সেই সঙ্গে দামও রাখা হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনকে মেডিকেল অক্সিজেনে রূপ দেয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, মেডিকেল অক্সিজেনের পরিবর্তে মুমূর্ষু রোগীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন দেয়া হলে তা মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
এ প্রসঙ্গে ডা. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন রোগীর জন্য ক্ষতিকর। এতে উপকারের থেকে ক্ষতিই বেশি।
অনেকেই অপ্রয়োজনীয়ভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়িতে মজুত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন সিলিন্ডারের কারণে বাসা বাড়িতে বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনার শঙ্কা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বির।
তিনি বলেন, ভেজাল সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হতে পারে। এ ধরনের অক্সিজেন যেন বাজারে না আসতে পারে সে ব্যাপারে সবার সজাগ থাকতে হবে। মানুষকেউ সচেতন হতে হবে।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ-তাদের অনেকেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে চলে গেছেন। তবে যারা এখনো ব্যবসা করছেন তারা অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
তারা বলেন, আমরা মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনের ব্যবসা করি। রিফিল করি। তাই তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো।
অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিন্ডের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে নগরীতে ছোট সাইজের সাড়ে তিনশ এবং বড় সাইজের তিনশ মেডিকেল অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় এক চতুর্থাংশ।