সাতক্ষীরায় জেলে অপহরণ, ভারতে বসে মুক্তিপণ আদায়

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভি,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,০৯ জুলাই : ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় বসে সুন্দরবনের মাছ ধরা জেলেদের অপহরণের পর জিম্মি করে মুক্তিপণ হিসেবে বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে আসছিল একটি চক্র।

বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সাতক্ষীরা শহরের কয়েকজন বিকাশ এজেন্ট এই কাজে জড়িত। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা এই অপরাধ করত বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

পুলিশ সুপার জানান, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে গোয়েন্দা বিভাগের একদল পুলিশ বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কিভাবে ভারতে টাকা পাচার করা হতো তা তদন্ত করতে গিয়ে ভারতে বসে মুক্তিপণের টাকা লেনদেনের প্রমাণ পান।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি একজন জেলেকে হত্যার পর চক্রটি প্রচার করেছিল তিনি পানিতে পড়ে মারা গেছেন। এ সব বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ে।

পুলিশ সুপার জানান, এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত শহরের মুনজিতপুরের মামুনুর রহমান খোকাবাবু, দেবহাটার খেজুরবাড়িয়ার আলাউদ্দিন গাজী, শহরের সুলতানপুরের তৈয়েবুর রহমান কামরান এবং রহমান এন্টারপ্রাইজের সাইদুর রহমান সাইদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক প্রদীপ ও তালা উপজেলার কুমিরা গ্রামের মিঠুন দাস এবং ভারতীয় নাগরিক ত্রিমোহনী গ্রামের আক্তার আলম গাজী, একই গ্রামের পান্না, বাপ্পি এবং ঘোজাডাঙ্গার হাসান এন্টারপ্রাইজের নুনুর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের রয়েছে একটি টর্চার সেল।

তাদের কাছে বাংলাদেশের বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা পাঠানো হয়। যতক্ষণ টাকা না পাঠানো হয় ততক্ষণ ধরে জেলেদের টর্চার সেলে আটক রেখে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মারধর ও নির্যাতন করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, পুরো এই চক্রটি জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণের নামে টাকা আদায় করে তা ভারতে পাঠিয়ে আসছে। এ ঘটনায় সাইদুর রহমান সাইদ, মামলার ভিকটিম এশার আলী ও সাক্ষী হারিজ হোসেন তুহিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

পুলিশ সুপার দাবি করেন, সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে এখনও জলদস্যুদের ৫টি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তারা মাছ ধরা জেলেদের অপহরণ করে ভারতে নিয়ে যাচ্ছে। পরে তাদের হত্যা করছে অথবা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল ইসলাম জিয়া, সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।