ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভি,ষ্টাফ রিপোর্টার,০৯ জুলাই : প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয়ে হুমকি দেয়ার পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণাসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে গেছেন আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ করিম। ঢাকা শহরের বাইরে চলাচলের সময় পেয়েছেন পুলিশী নিরাপত্তা। এমনকি অপকর্ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে এক কর্মচারীর পুরো পরিবারকে মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
শাহেদ করিমের প্রতারণা বিষয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে আগেই সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
শাহেদ করিম বলেন, ‘আমি এখন প্রধানমন্ত্রীর এপিএসের দায়িত্বে। আমার সাথে এগুলো করে কুলাইতে পারবা ভাইয়া বলোতো। যেহেতু আমি এখন একটা পজিশন হোল্ড করি, যদি চারটা থানায় তোমার নামে কইসা মামলা দেই ঠিক হবে জিনিসটা।’
ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘এখন আপনি যদি মামলা দিতে চান দেন আপত্তি নেই।’
এক সময়ের ব্যক্তিগত কর্মচারী আরিফুর রহমান সোহাগকে ফোনে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ করিম।
শুধু’ই যে হুমকি দিয়েছেন তা কিন্তু নয়। ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় ২০১৭ সালে দায়েরকৃত এক মামলায় আসামি করা হয়েছিল সোহাগ ছাড়াও তার বৃদ্ধ বাবা-মা এবং তিন বোনকেও। কিন্তু শাহেদ করিম রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে আদালতে সাক্ষ্য দিতে না যাওয়ায় বছরের পর বছর মামলার ঘানি টানছে এই পরিবার।
ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর ধরে এই মামলায় আমি ঝুলছি।’
ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগের মা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘‘আমাদের নামে মামলা দিছে আমরা নাকি টাকা বইয়ে আনতে যাবার লাগছি।’
অভিযোগ পাওয়া গেছে, গত কয়েক বছর ধরে নানা পরিচয়ে অপকর্ম করে আসছিলেন শাহেদ করিম। সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠায় তার বিষয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল।
বিভিন্ন ভিডিও এবং স্থির চিত্রে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত শাহেদ করিম ঢাকার বাইরে গেলেই প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ স্কট ব্যবহার করেছিলেন। তার অফিস কক্ষের টর্চার সেলে নির্যাতনের স্থির চিত্রও প্রকাশ হচ্ছে এখন।
ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘তার গাড়ি কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে মেয়ে কেলেঙ্কারি সবকিছুই আমি জানতাম। যার কারণে সে কখনোই আমাকে ছাড়তে চাই না। এছাড়াও আমাকে বলছে, আমি যদি কোথাও মুখ খুলি তাহলে আমাকে জানে মেরে ফেলবে।’
করোনার নমুনা পরীক্ষা না করেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠার পর শাহেদ করিমের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে অভিযান শুরুর আগেই শাহেদ করিম বিদেশে পালিয়ে গেছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।