ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,০১ জুন : মহামারি করোনাভাইরাসের কারেণ টানা ২ মাসের বেশি সময় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকার পর সোমবার (১ জুন) থেকে চলাচল শুরু করেছে দেশের পরিবহন।
সকাল থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন খালি রেখে এবং ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া নিয়েই রাজধানীতে চলাচল শুরু করেছে গণপরিবহন। একই সঙ্গে রাজধানী থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে দূরপাল্লার বাসও।
রাজধানীর ধানমন্ডি, জিগাতলা, মোহাম্মদপুর, সিটি কলেজ, নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সকাল থেকেই অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে নগরীর গণপরিবহন। যাত্রীরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে উঠছেন।
ধানমন্ডি থেকে মতিঝিল রুটের যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর আজ পরিবহন চলাচল করছে। অফিস খুলছে, তাই গণপরিবহন চলাচল করা খুব দরকার ছিল। তবে কথা হচ্ছে, এখন পরিবহন চলাচলে সরকারের আদেশ, স্বাস্থ্যবিধি যেন যথাযথভাবে পালন করে সেটাই আমাদের কাম্য।
তিনি বলেন, আমি রজনীগন্ধা বাসে উঠে দেখেছি ড্রাইভার, হেলপার সবাই মাস্ক ব্যবহার করছে। বাসে জীবাণুনাশক স্প্রেও রয়েছে। আর ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রীও নেওয়া হচ্ছে না।
রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বাসে ওঠার জন্য যাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। বাসে ওঠার সময় যাত্রী মাস্ক পরা রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে বাসে ওঠানো হচ্ছে। আর অর্ধেক যাত্রী বাসে ওঠা হয়ে গেলেই দরজা বন্ধ করে চলে যাচ্ছে বাসগুলো।
জিগাতলা বাস স্ট্যান্ডে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব থাকা ধানমন্ডি থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ইউসুফ হোসেন বলেন, আমাদের কড়াকড়ি ভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী না নিতে পারে। আর সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে ওঠে, সেটা নজরদারি করতে। তাই আমরা সকাল থেকেই কোনো অনিয়ম হতে দিচ্ছি না৷ আর এ এলাকায় যে সব বাস চলাচল করছে তাতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাচল করছে।
এছাড়া রাজধানী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার পরিবহনগুলোতে একটি সিটে যাত্রী অপরটি ফাঁকা রেখে যাত্রী তোলা হচ্ছে। বাসের যাত্রীদের ওঠানোর সময় লাইন ধরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ওঠানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে যাত্রী তোলার বিষয়ে এনা পরিবহনের ম্যানেজার মিজানুর রহমান ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমকে বলেন, সরকার থেকে যেসব নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়েছে সেসব মেনেই আমরা বাস পরিচালনা করছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানী থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে সকাল থেকে কয়েকটি বাস ছেড়ে গেছে। চেষ্টা করছি আমাদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি ভালোভাবে মেনে চলার।
তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের অর্ধেক যাত্রী বহন করতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমরা লসের সম্মুখীন হতে হবে। তাই সরকার ভাড়া সমন্বয় করে যে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে সে অনুযায়ী আমরা ভাড়া নিচ্ছি। একইসঙ্গে বাস চালক, হেলপার এবং সুপারভাইজারকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আমাদের সব ধরনের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।
৩১ মে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে কমযাত্রী তুলতে হবে বাসে এবং মালিকদের ক্ষতি পোষাতে আন্তঃজেলা এবং দূরপাল্লার বাস ও মিনিবাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বলা হয়, দূরপাল্লার পথে বর্তমান ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে বর্ধিত ৬০ শতাংশ।