গোটা বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ষ্টাফ রিপোর্টার,১৭ এপ্রিল : বাংলাদেশে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন ২০১৮’র ক্ষমতাবলে সারা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। সেহেতু সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ১১(১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হল।

সংক্রমিত এলাকার জনসাধারণকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে কঠোরভাবে এগুলো অনুসরণ করার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনগণকে অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে, অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচাল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলো। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না।এসব নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করেছে। এ কারণে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে এক লাখের বেশি মানুষ। বাংলাদেশেরও বিভিন্ন জায়গায় এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। এখন পর্যন্ত এই রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এ রোগের একমাত্র প্রতিষেধক পরস্পর থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করা।বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকায় ৫৪৬ জন, নারায়ণগঞ্জে ২১৪ জন, গাজীপুরে ৫৩ জন, চট্টগ্রামে ৩১ জন, নরসিংদীতে ২৮ জন, মুন্সিগঞ্জে ২১ জন, মাদারীপুরে ১৯ জন, কিশোরগঞ্জে ১৭ জন, কুমিল্লায় ১৪ জন; গাইবান্ধা ও জামালপুরে ১২ জন করে, বরিশালে ১০ জন; গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে ৯ নয় করে করোনাভাইরাসের রোগী পাওয়া গেছে।এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৮ জন, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহে ৭ জন করে; চাঁদপুর, নিলফামারী ও রাজবাড়ীতে ৬ জন করে; মানিকগঞ্জ ও শরিয়তপুরে ৫ জন করে; বরগুনা, নেত্রকোণা, পিরোজপুর ও রাজশাহীতে ৪ জন করে; ঝালকাঠি, শেরপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ জন করে; ফরিদপুর, কুরিগ্রাম, লালমনিরহাট, মৌলভীবাজার, পটুয়াখালী ও রংপুরে ২ জন করে এবং চুয়াডাঙ্গা, কক্সবাজার, হবিগঞ্জ, খুলনা, লক্ষ্মীপুর, নড়াইল, নোয়াখালী ও সুনামগঞ্জে একজন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে।ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইতোমধ্যে ৪৮টি জেলা লকডাউন করেছে প্রশাসন। এর বাইরেও কিছু উপজেলা এবং কিছু অঞ্চলে লকডাউন জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।এর আগে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃত্যু হলো ৬০ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ২,০১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ৩৪১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১,৫৭২ জন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এখন ৪৬১ জন আইসোলেশনে আছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯ জন। সারাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৮৮ টি প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে কোয়ারেন্টিনের সেবা দেয়া যাবে ২৬ হাজার ৩৫২ জনকে।  উল্লেখ্য, দেশে নভেল করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।