সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নিজম্ব প্রতিনিধি,১২ এপ্রিল : খুনী আবদুল মাজেদ শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেনি, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানার ভেতর ঢুকে জাতীয় চার নেতাকে হত্যায় অংশ নিয়েছিল।
সেই জাতীয় চার নেতার অন্যতম একজন কিশোরগঞ্জ জেলার যশোদল ইউনিয়নে বীরদামপাড়া গ্রামের সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তিনি ইতিহাসের প্রধানতম পুরুষ, যার প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার মধ্যদিয়ে পাকিস্তানের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে। যিনি ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল থেকে ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেই হত্যাকাণ্ডের পর সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রথমে গৃহবন্দি এবং ২৩ আগস্ট, ১৯৭৫ তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়৷ পরে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় সৈয়দ নজরুল ইসলামকেও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
হত্যার পর পরিবারের সদস্যরা ছিল দিকহারা। দেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম ও সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম, সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এবং সৈয়দা রাফিয়া নূর। পিতৃহারা সন্তানদের তখন কেটেছে নির্ঘুম অনেক রাত।
এদিকে করোনাভাইরাসে স্তম্ভিত পুরো দেশ, তবুও বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার আত্মস্বীকৃত খুনি পলাতক আবদুল মাজেদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়াতে খুশির ফোয়ারা অনুভুত হয়েছে সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবারে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরাজ করছে স্বস্তির নিঃশ্বাস। প্রিয় নেতার খুনিকে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলানোয় আনন্দে আত্মহারা কিশোরগঞ্জবাসী।
সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এক প্রতিক্রিয়ায় ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমকে বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার একমাত্র ফাঁসি। বহু সময় পেরিয়ে গেলেও আজ কাঙ্ক্ষিত লগ্নে আবদুল মাজেদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় পুরো দেশবাসী যেমন খুশি, তেমনি আনন্দিত ও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছি আমরা। টিভিতে রাত ১২টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দাশ্রু বের হয় আমার চোখে। স্মৃতিতে ভেসে উঠে প্রিয় বাবার ছবি।
আমার বাবা এই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। উনাকে যখন জেলখানার ভেতর হত্যা করা হয়, তখন আমি খুব ছোট। বাবার মৃত্যুর পর আমাদের পরিবার খুব কষ্টে দীর্ঘ সময় পার করেছি। হয়তো দীর্ঘ প্রত্ক্ষিার পর খুনিদের রায় কার্যকর হচ্ছে, ফাঁসি হচ্ছে। তবুও আমরা চাই বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চারনেতার হত্যাকাণ্ডে যারা যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে এমনভাবেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক।