ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,আদালত প্রতিনিধি,০৪ এপ্রিল : ঢাকা থেকে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর পাঠানো ইমেইল মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে।করনোভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী চলা সাধারণ ছুটির সময় এ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বরগুনা পুলিশ প্রশাসন।
জানা যায়, বরগুনার আমতলী থানা হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা থেকে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের পাঠানো ইমেইল অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করেছে পুলিশ। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বলছেন, দেশ একপ্রকার লকডাউন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইমেইলে পাঠানো অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে বরগুনার পুলিশ সুপার ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
গত ৩০ মার্চ রাতে সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ঢাকা থেকে ইমেইলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ৬ ও ৭ ধারা মতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ অভিযোগ দায়ের করেন।
বুধবার (১ এপ্রিল) রাতে বরগুনার পুলিশ সুপারের নির্দেশে ইমেইলে পাঠানো অভিযোগ আমতলী থানার ওসি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেন। বৃহস্পতিবার মামলা নেওয়ার বিষয়টি রাইজিংবিডির সংবাদের মাধ্যমে প্রথম প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, হেফাজতে মৃত্যু হলে আইন অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষের মামলা করার সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে এবং ইমেইলের মাধ্যমে এজাহার দায়ের করতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি বর্গের কৃতকর্মের দায় সম্পূর্ণ পুলিশ ডিপার্টমেন্ট নেবে কেন? এ মামলা রেকর্ড করে পুলিশ প্রমাণ করলো যে তারা কোনো ব্যক্তিবর্গের অপকর্মের দায় নেবেন না। এটি সমাজের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় উদাহরণ হয়ে থাকবে। করোনার কারণে সারাদেশ লকডাউন অবস্থায় রয়েছে। এমন অবস্থায় অনলাইনে মামলা নথিভুক্ত করে পুলিশ নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে আমি মনে করি।
বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমকে মামলা নেওয়ার বিষয়ে বলেন, অনলাইনে কাজ করার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান ইমেইলে যে অভিযোগটি পাঠিয়েছিলেন, বরগুনার জেলা জজও সেটার কপি আমাকে পাঠিয়েছেন। পরে আমি অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেই। আমতলী থানার ওসি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেন।
গত ২৬ মার্চ বরগুনার আমতলী থানা হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও সহকারী উপপরিদর্শক আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন।
ময়নাতদন্ত শেষে ২৬ মার্চ রাত ১১টার দিকে শানু হাওলাদারের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।