ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,০২ এপ্রিল : যত দিন সরকারি নির্দেশনা রয়েছে তত দিন সড়কে মানুষের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন চলতে দেওয়া যাবে না। গতকাল বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম সড়কে টহল বাড়ানোসহ আইন না মানলে প্রয়োজনে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন। তবে সবার সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বলেছেন তিনি।
মহানগরীর আটটি ক্রাইম জোনের উপকমিশনারসহ শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।
ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে বিদেশ থেকে আসা লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখতে পুলিশ কর্মকর্তাদের কড়াকড়ি আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। এ ছাড়া বৈঠকে ঢিলেঢালা ব্যবস্থাপনার কারণে ইতালি ও স্পেনে বিপর্যয় নেমে আসার কথাও আলোচনা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশকে আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সাধারণ ছুটির আওতায় দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে অকারণে অনেক দোকান খোলা রাখা হচ্ছে। অলিগলিতে আড্ডায় বসছে মানুষ। অনেকে ঘোরাঘুরি করছে। এভাবে চলতে দেওয়া হবে না। সবাইকে ঘরে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। চেকপোস্টে তল্লাশি জোরদার করে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া বৈঠকে ঢাকা মহানগরীর সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন ডিএমপি কমিশনার।
বৈঠকে উপস্থিত ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মো. মুনতাসিরুল ইসলাম ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ মানুষ যাতে জরুরি ও যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া অহেতুক রাস্তায় ঘোরাঘুরি না করে সেটা নিয়ন্ত্রণে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মানুষের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে। তবে কেউ আইন না মানলে কিছুটা কঠোর হতে বলা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, যেসব এলাকায় অভাবী, খেটে খাওয়া, শ্রমিক শ্রেণির লোকজনের বসবাস বেশি সেসব এলাকার লোকজন রাস্তায় বেশি বের হচ্ছে। তারা মূলত কাজ ও সাহায্য-সহযোগিতা পেতে রাস্তায় নামছে। এ ছাড়া অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি বের করছেন। তবে সিএনজি, পাঠাও চালকরা আর্থিক অনটনের কারণে সড়কে বের হচ্ছেন। তবে যেহেতু সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার, তাই পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে বাইরে অহেতুক ঘোরাঘুরি নিয়ন্ত্রণ করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
জানতে চাইলে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘মানুষ যাতে ঘরে থাকে, যেন অপরাধীরা সক্রিয় হতে না পারে তা নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে।’
গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে এরপর ছুটি বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এ সময়ের মধ্যে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।